দেশ দুনিয়া নিউজ ডেস্ক: মহাবিশ্বের দিকে যদি আমরা দৃষ্টিপাত করি তাহলে কি আমরা কোন ত্রুটি দেখতে পাই?
একে আরো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে আমাদের নিকট প্রতিয়মান হবে যে, সব কিছুতে একটা সুশৃঙ্খল এবং সুনির্দিষ্ট মহাজাগতিক কারুকাজ/নির্মাণশৈলী রয়েছে।
আমরা যদি আমাদের গ্রহ অর্থাৎ পৃথিবী নিয়ে গবেষণা করি তাহলে বিষ্ময়াভূত হব জেনে যে, এর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছু এমন সুনিপুণ ভারসাম্যভাবে স্বর্গীয় কলাকৌশল দ্বারা সৃজীত হয়েছে যেন মানবজীবন বিকশিত হতে পারে। বিজ্ঞানীগণ বলেন যে, অণুপরমাণু থেকে শুরু করে আসমান, যমীন, পাহাড়, সাগর, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, নিহারিকাপুঞ্জসহ, প্রাণী ও উদ্ভিদ জগৎ, বাস্তুতন্ত্র, মহাকর্ষ অভিকর্ষ, আহ্নিকগতি বার্ষিকগতি, পানি চক্র সবকিছু সুনির্দিষ্ট প্রাকৃতিক আইন মেনে চলে এই পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী রেখেছে ।
তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ্ তাআলার সৃষ্টিতে কোন খুঁদ দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি? (৬৭:৩)
অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ- তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে। (৬৭:৪)
যার জন্য এত আয়োজন সেই মানুষ যদি নিজেকে নিয়ে চিন্তা করে তাহলে বুজবে সে কত উত্তম দৈহীক গঠন ও আকৃতিসম্পন্ন বুদ্ধিমান প্রাণী। তার দেহের ব্যাবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা করে তাহলে দেখতে পাবে এটি একটি সর্বৌত্তম আকৃতি দিয়ে তৈরী বিস্ময়কর মেশিন। যেমন মস্তিষ্ক (কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ বিভাগ), হৃদতন্ত্র (দেহের সবচেয়ে পরিশ্রমি অঙ্গ, অনেকটা ইঞ্জিনের মত, যা বিরামহীন চলতে থাকে এবং রক্ত সরবরাহ করে), পাচনতন্ত্র (সবকিছু প্রক্রিয়াজাত হয়ে দেহকে প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ করে এবং বর্জ্য নিঃস্বরণ করে), শ্বাসযন্ত্র (এটি দেহে জীবন রক্ষাকারী জ্বালানী সরবরাহ করে), ত্বক (দেহের সবচেয়ে বৃহত অঙ্গ যা দেহকে সুরক্ষা করে এবং সেন্সরের কাজ করে)। এই মেশিনটির সব কিছু পরিচালিত হচ্ছে সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতির মধ্যে দিয়ে।
“বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং তোমাদের নিজেদের মধ্যেও, তোমরা কি অনুধাবন করো?” (সুরা ৫১ঃ২১-২২)
মানবজাতির বিবেককে অর্গলমুক্ত করার জন্য কুরান কত আলঙ্করিকভাবে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছে।
তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? না তারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না (৫২:৩৫-৩৬)
এইসব কিছু ও প্রাকৃতিক আইনগুলো কি এমনিতে সৃষ্টি হয়েছে না নিজেরা নিজেদের স্রষ্টা? এই যে আপনারা এতক্ষণ পড়লেন, এই লেখাগুলো কি লেখক ব্যাতিত একটা যাদুর কলম কাকতালীয়ভাবে উদ্দেশ্যহীন লিখে ফেলেছে? না একজন নির্মাণশীল্পি রয়েছে?
আমাদের সাধারণ বিবেকবোধ ব্যাবহার করে এই উপসংহারে পৌছাতে পারি যে এগুলো স্বনির্মিত নয়, নিজেরা নিজেদেরকে সৃষ্টি করেনি (একজন সৃষ্ট আরেকজন সৃষ্টকে সৃষ্টি করতে পারেনা), মানবজাতি আসমান ও জমিনের স্রষ্টাও নয়। তার অর্থ হল, এমন একজন মহাজ্ঞানী ডিজাইনার রয়েছেন যিনি জাতক ও জনক নন, সবাই তার উপর নির্ভরশীল, কিন্তু তিনি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং উনার সমতুল্য কেউ নাই। যিনি পৃথীবি ও জগৎ সমুহ এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুর স্রষ্টা (খালেক), প্রতিপালক (রব), নিয়মনীতি ও আইনকানুন দাতা (আল হাকিম)।
মানুষ ও জ্বীন ব্যাতীত পৃথিবী ও জগৎসমুহে যা কিছু আছে সবকিছু সেই মহান সত্তার হুকুমমেনে সুষ্ঠুভাবে ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। এই সৃষ্ট সমুহ (মাখলুক) প্রকৃতিগতভাবে আল্লাহর অনুগত (মুসলিম); ইচ্ছে বা অনিচ্ছা করে আল্লাহর সীমালঙ্গনের ক্ষমতা রাখেনা (সর্বদা আল্লাহর ইবাদতরত)। আল্লাহ পরীক্ষার উদ্দেশ্যে চাইলেন এমন এক প্রকার মর্যাদাসম্পন্ন মাখলুক সৃষ্টি করতে- যাদেরকে তিনি বিচারবোধ ও চেতনসম্পন্ন করবেন এবং পর্যাপ্ত স্বাধীনতা দিবেন। উনি দেখতে চান, ব্যাক্তিজীবনে তার অনুগত থাকে কিনা (ইবাদত)?
এই মাখলুকের সেবা দেওয়ার জন্য অধীন করে দিবেন নভোমন্ডল, ভূমন্ডল, জল ও স্থলের অনেক কিছু। এরপর দেখতে চান সেগুলোকে সে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা (খলিফা) করে কিনা?
মহান রব মানবজাতীর অন্তর ও প্রচেষ্টা দেখতে চান এবং সাধ্যাতীতভার অর্পন করতে চাননি তাই সুষ্ঠুভাবে ইবাদত ও খেলাফতের দায়িত্ব পালন করে যেন সবাই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে সে জন্য আল্লাহ সুবহানু ওয়াতায়ালা মানবজাতির জন্য তিন মাধ্যমে গাইডলাইন পাঠিয়েছেন-
১) একটি জাগতিক ও আধ্যাত্মিকতায় পরিপূর্ণ জীবন বিধান মনোনীত করলেন তা হল, ইসলাম।
২) সত্য ও মিথ্যার পার্থক্যকারী আলোকিত পথের দিশা দানকারী কিতাব, কুরআন নাযিল করেছেন।
৩) সর্বৌত্তম আদর্শ মুহাম্মদ সা কে পাঠালেন।
“নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্ট বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।” (সুরা ইসরা আয়াত ৭০)
তিনি আল্লাহ যিনি সমুদ্রকে তোমাদের উপকারার্থে আয়ত্বাধীন করে দিয়েছেন, যাতে তাঁর আদেশক্রমে তাতে জাহাজ চলাচল করে এবং যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ তালাশ কর ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ হও।
এবং আয়ত্ত্বাধীন করে দিয়েছেন তোমাদের, যা আছে নভোমন্ডলে ও যা আছে ভূমন্ডলে তাঁর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। সুরা জাছিয়া আয়াত ১২-১৩
যে ব্যাক্তি এই জীবন বিধান দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে পৃথিবীতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং বস্তুতন্ত্র (প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য) সুরক্ষায় জীবন ও সম্পদ দিয়ে আমৃত্যু সংগ্রাম করবে তাকে বলা হবে মুসলিম (আত্নসমর্পণকারী)। এই বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন মুমিনদের আল্লাহ জমীনের শাসনভার দিবেন বলে ওয়াদা দিয়েছেন। সে হবে জমীনে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। সে পৃথিবীকে জান্নাতের বাগিচায় রুপান্তরের জন্য আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহর নির্দেশনা মাথায় রেখে এমন পলিসি গ্রহণ করবে যেন মানুষ, প্রকৃতি ও প্রাণী জগৎ এর সাথে মেল বন্ধন তৈরী হয়।
প্রযুক্তি, উন্নয়ন, আবিস্কার হবে পরিবেশ ও জনবান্ধব, শোষণ-বৈষম্যহীন, ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত নীতি নৈতিকতায় শান্তিতে পরিপূর্ণ একটি প্রগতিশীল সমাজ। এই আদর্শের বৈশিষ্ট্য হল এতে দুটি দিক রয়েছে- ১) আধ্যাত্মিকতা। ২) জাগতিকতা। এই দুটিকে সম্পূর্ণরুপে দ্বীধাহীন চিত্তে গ্রহণ করে এই আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ভাবে বিজয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরাশক্তি করার জন্য সর্বাত্নক প্রচাষ্টা চালাবে তাকে মুসলিম বলা হবে।
এই আদর্শের উপর ভিত্তি করে সমাজের বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল-
১) এর আধ্যাত্মিক দিকটি সমাজে বসবাসরত অন্যধর্মালম্বি নাগরিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হবেনা। তারা স্বাধীনভাবে তাদের বাক্তিগতভাবে ধর্মকর্ম ও আদর্শ লালন করে সমমর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে পারবে। স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারবে। তবে মানুষ ও জগৎ বিরুদ্ধ হওয়া যাবেনা।
আল্লাহ বলেন, দ্বীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে পৃথক হয়ে গেছে। এখন যারা গোমরাহকারী ‘তাগুত’দেরকে মানবে না এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে, সে ধারণ করে নিয়েছে সুদৃঢ় হাতল যা ভাংবার নয়। আর আল্লাহ সবই শুনেন এবং জানেন। সুরা বাকারাহ আয়াত ২৫৬
২) ভিন্ন ধর্মালম্বি ও মতের অনুসারীদেরকে বিজ্ঞতা, উন্নত উপস্থাপনা ও শিষ্ঠাচারের মাধ্যমে আলাপ, আলোচনা, সেমিনার, বিতর্ক করে আহবান করা হবে। তারাও তাদের ধর্ম ও আদর্শ প্রচার করতে পারবে।
যে ব্যাক্তি জীবনে আল্লাহর হুকুমের তোয়াক্কা করলোনা সে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজের হাওয়াকে (আত্নাকে) ‘ইলাহ’ বানিয়ে নিল, আর রাষ্ট্রীয় জীবনে সে নিজেকে ‘রব’ বানিয়ে ফাসেক, জালেম ও কুফরে পতিত হল।
মানবজাতি যখন ব্যাক্তি ও সামষ্টিক জীবনে (রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক) আল্লাহর পরিবর্তে কাওকে শাসক, ধর্মগুরু বা কোনকিছুকে (প্রবৃত্তি, মূর্তি, পাথর, আগুন, চাঁদ সূর্য,…) ইলাহ হিসেবে এবং জীবন বিধান হিসেবে ‘ইসলাম’ কে বাদ দিয়ে মানব রচিত মতবাদ ও ধর্মসমুহকে গ্রহণ করেছে, তখন সে মানুষের মর্যাদা বিরুদ্ধ ও জগৎ এর সাথে সাংঘর্ষিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। এই যে পৃথিবীতে যত প্রাকৃতিক দূর্ঘটনা, যুদ্ধ বিগ্রহ, রোগ শোক, মহামারী, নির্যাতন, বৈষম্য অর্থাৎ যত বিপর্যয় ঘটছে তার অধিকাংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট। ব্যাক্তিজীবনে সে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পাপাচারী, স্বেচ্ছাচারী, আত্নকেন্দ্রীক, লোভী ও স্বার্থপর এবং দাম্ভিক হয়ে উঠে। ফলে সে প্রাণ ও জগৎ বিনাশী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে পড়ে এবং শয়তানের প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক জীবনে উন্নয়ন ও প্রগতির নামে এমন সব পলিসি নির্ধারণ করে যা মানুষের মর্যাদা বিরুদ্ধ। বাস্তুতন্ত্রের ও জীববৈচিত্রের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও ভারসাম্য বিনষ্টকারী।
আল্লাহ বলেন, যখন ফিরে যায় তখন চেষ্টা করে যাতে সেখানে অকল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণনাশ করতে পারে। আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না। সুরা বাকারাহ আয়াত ২০৪
আল্লাহ আরো বলেন, জলে স্থলে যে বিপর্যয় (মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ) তা মানুষের কৃতকর্মের ফল। যার ফলে তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি তিনি আস্বাদন করান, যাতে তারা (আল্লাহর পথে) ফিরে আসে।
বলুন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল তা দেখো। তাদের অধিকাংশই ছিল মুশরিক। (আল কোরআন, সূরা রুম, আয়াত-৪১-৪২)।
কিভাবে আমাদের কৃতকর্মের ফল তা নিম্নের উদাহরণের মাধ্যমে বোঝা যাবে?
১) যেমন, বনউজাড়, অপরিকল্পিত শিল্প কারখানার মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্যের অব্যাবস্থাপনা, যানবাহন ও কলকারখানার ও জীবাশ্ম জ্বালানির কালো ধোঁয়া, শব্দদূষণ ইত্যাদির মাধ্যমে জলবায়ু ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এর ফলে গ্রীনহাউজ গ্যাস ভারসাম্যহীন হচ্ছে, ওজনস্তর ক্ষয় হচ্ছে, ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন দূর্ভীক্ষ, বন্যা, খরা, মহমারী, ভূমিকম্প, ঘূর্ণীঝড় সৃষ্টি হচ্ছে। পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ মারা যায় পরোক্ষভাবে মনুষ্যসৃষ্ট এই বিপর্যয় দ্বারা ।
২) লোভী ও স্বার্থপর মানুষ অধিক মুনাফার আশায় খাদ্যে ভেজাল, অস্বাস্থকর ও নিম্নকোয়ালিটির খাবার বাজারজাত করছে, হারাম খাবার ভক্ষনের ফলে মানুষ বিভিন্ন জটিল ও কঠিনরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৪৫ লাখ লোক খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছে। গবেষণা বলছে-
ক) মানুষের মধ্যে সমস্ত সংক্রামক রোগের প্রায় ৬০ শতাংশ zoonotic
খ) সমস্ত উদীয়মান সংক্রামক রোগের ৭৫ শতাংশ
গ) মানুষের মধ্যে গড়ে একটি নতুন সংক্রামক রোগের উত্থান ঘটে প্রতি চার মাস।
ঙ) যদিও ভাইরাসের উদ্ভব বন্যজীবনে। প্রাণিসম্পদ সমুহ বন্যপ্রাণী ও মানব সংক্রমণ মধ্যে এপিডেমিওলজিকাল ব্রিজ হিসেবে কাজ করে। (UNEP FRONTIERS 2016 REPORT)
৩) আত্নপুজারী মানুষ আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করে যৌন উত্তেজক পোশাক, অশ্লীলতার প্রদর্শনী, ফ্যাশন-শো, পর্ণ ইন্ড্রাষ্ট্রি গড়ে তুলছে। বিবাহবহির্ভূত যৌনাচার করছে। মানব বিধ্বংসী বিভিন্ন মারণাস্ত্র, রাসায়নিক ও জীবানু অস্ত্র তৈরী করছে। ফলে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ও সমাজে পরকিয়া, বিকৃত যৌনাচার ও বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্যে ব্যাবহার বাড়ছে। নারী সমাজ ইভটিজিং ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ও বিভিন্ন রোগ ও ভাইরাস সৃষ্ট মহামারিতে মানুষ মারা যাচ্ছে। যেমন ধুমপান অথবা তামাক জাতীয় দ্রব্যের ব্যাবহারে প্রতিবছর ৭০ লক্ষ মানুষ মারা যায়। Tobacco use kills more than 7 million people each year.(who)
পৃথিবীতে প্রতি তিনজনের একজন নারী শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৪১৩ নারী। এর মধ্যে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৭৬ জন এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১০ জন।
৩১ ডিসেম্বর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০১৯: আসকের পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
৪) আল্লাহর প্রদত্ত অর্থনৈতীক নীতি প্রত্যাখ্যান করে সুদভিত্তিক পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবাস্থা গ্রহণের ফলে দেশে গুটিকয়েক মানুষের হাতে কুক্ষিগত হচ্ছে দেশের সিংহভাগ অর্থনীতি। বাড়ছে আয় বৈষম্য, অতিধনী ও ধ্বনীর হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিধনী বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বাংলাদেশ ছিল বিশ্বে প্রথম। আর সার্বিক দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালে ২১ দশমিক ৮ শতাংশে । আর অতি দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশে।
৫) অনুন্নত ও অপরিকল্পিত অবকাঠামো, লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, ট্রাফিক আইন লঙ্গণ, চালকের বেপরোয়া মনোভাব। ইত্যাদির ফলে ২০১৯ সালে ৪৭০২ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৫২২৭ জনের।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠনের করা ‘২০১৯ সালের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে’ এসব তথ্য উঠে এসেছে। সুতরাং আমরা কি বলতে পারিনা এগুলো মানবজাতির হাতের কামাই?
এই অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘনের ফলেই দূর্যোগসমুহ আসে। এর মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করেন অথবা শাস্তি দেন যেন ফিরে আসে। ইস্তেগফার (কৃত কুকর্মের জন্য অনুশোচনা) করে। পাপ পঙ্কিলতা ছেড়ে তাওবা (ব্যাক্তিগত পাপাচার ও মানুষ, প্রকৃতি ও প্রাণী জগৎ বিনাশী কর্মকান্ড থেকে ফিরে আসা) এবং হেদায়েতের পথে আসার জন্য (ব্যাক্তিজীবনে ইসলামের অনুসরণ ও রাস্ট্রীয় জীবনে মানুষ, প্রাণী ও প্রকৃতি বান্ধব প্রগতিশীল পলিসি নির্ধারণ)।
আল্লাহ বলেন, আল্লাহ কখনই তাদের উপর আযাব নাযিল করবেন না যতক্ষণ আপনি তাদের মাঝে অবস্থান করবেন। তাছাড়া তারা যতক্ষণ ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে আল্লাহ কখনও তাদের উপর আযাব দেবেন না। (সুরা আনফাল আয়াত ৩৩)
সে হেদায়াহ হল, তওহীদ ও ইসলাম। জীবনের সর্বস্তরে, সর্ব অঙ্গনে এক আল্লাহ ব্যাতিত অন্যের আইন-কানুন, আদেশ-নিষেধ অস্বীকার করা এবং একমাত্র তাঁরই আদেশ-নিষেধ পালন করা অর্থাৎ বিশ্বজগৎ এর প্রতিপালকের নিকট আত্নসমর্পণ করা। এটি হল সীরাতয়াল মুসতাকীম (সহজ সরল পথ)। যে পথে চললে মানবজাতী ও জগৎ এর সাথে মেলবন্ধন সৃষ্টি হবে। যে শাশ্বত বিধান অর্থাৎ নিয়ম, সূত্র, ধর্ম (হুকুম) ইচ্ছে হোক অথবা অনিচ্ছায় মেনে পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি অণু পরমাণু, উদ্ভিদ ও প্রাণীজগৎ, সৌরজগত সবাই সুশৃঙ্খল রয়েছে। বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আমরা জানতে পেরেছি সূর্যকে কেন্দ্র করে গ্রহসমুহের প্রদক্ষিণ, পৃথিবীর আহ্নিকগতি ও বার্ষিকগতি, মহাকর্ষ অভিকর্ষ,পানিচক্র, গাছপালা ও পশুপাখি, মানবদেহের অংগপ্রত্যঙ্গসমুহ ও রক্ত সঞ্চালন সবকিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সুশৃঙ্খল রয়েছে ।
আল্লাহ মানবজাতিকে প্রশ্ন করছেন , তারা কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে। সুরা আল ইমরান আয়াত ৮২
লেখক: ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাসান
ইতালী প্রবাসী
source https://deshdunianews.com/%e0%a6%aa%e0%a7%83%e0%a6%a5%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%96-%e0%a6%93-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ad%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a7%8d/
0 Comments