দেশ দুনিয়া নিউজ ডেস্ক:
হেফাজতের প্রোগ্রামে অপারগতার কারণে আসতে না পারায় বাংলাদেশের প্রখ্যাত গ্র্যান্ড মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ এর প্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি নিউজ পোর্টাল মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি তার ফেসবুক পেজে একটি মুক্ত কলাম লেখেন। যা পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
“বর্তমানে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আমাদের বিশ্বনবীর ব্যঙ্গচিত্রের কার্টুন প্রদর্শনের মাধ্যমে পুরো মুসলিম বিশ্বের সাথে যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তার প্রতিবাদে আজ বিশ্বের মুসলমান কঠিন থেকে কঠিন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
বাংলাদেশের মত একটি ছোট মুসলিম দেশ এই প্রতিবাদে সকলের সম্মুখকাতারে দাঁড়িয়ে আছে। এই মহান জেহাদে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করছে উলামায়ে দেওবন্দ। আমি আশা করি যতদিন পর্যন্ত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মুসলিম জাতির কাছে ক্ষমা না চাইবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আরো কঠিন কর্মসূচিতে অবতীর্ণ হতে হবে।
এ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, সমমনা ইসলামী দলসহ যারা যারা এই পবিত্র জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন, বড় ভূমিকা পালন করেছেন সকলেই নিজ নিজ ঈমানী দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং যাবেন।
আমি দীর্ঘ পঁচিশ দিন থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থতায় ভুগছি। তা সত্বেও গত শুক্রবার এলাকার আঈম্মা, খুতাবা , মারকাযুশ শাইখ যাকারিয়ার সকল ছাত্র ওস্তাদ ও এলাকার সর্বস্তরের তৌহিদি জনতাকে নিয়ে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার নবীপ্রেমিকের এক কাফেলাসহ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল পরিচালনা করার তাওফিক হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
বিগত দুই তারিখে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের একান্ত ইচ্ছা ছিলো, কিন্ত শারীরিক অসুস্থতার কারণে মোটেও হিম্মত পাইনি। তবে সকাল নয়টার দিকে হেফাজতের এক শীর্ষ নেতার আমন্ত্রণ পেলে যাওয়ার কিছুটা সাহস করে সাথে সাথে বাসা থেকে প্রস্তুতি নিয়ে মাদরাসায় আসি । এবং তৎক্ষণাৎ ছাত্র শিক্ষকদেরকে নিয়ে রওনা করার ইচ্ছা পোষণ করে বের হবার পূর্বমুহূর্তে রাস্তায় বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হবার সংবাদ পাই। তখন এই অসুস্থ শরীর নিয়ে সে বাধা ডিঙিয়ে যাওয়ার হিম্মত হারিয়ে ফেলি। উল্লেখ্য, ইদানিং ব্যাক পেইন ও দুর্বলতার কারণে পায়ে হেঁটে চলা আমার পক্ষে প্রায় অসম্ভব ।
আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে এই ইস্যুতে ওলামায়ে হক্কানীর যারাই ডাক দেবেন তাদের সাথে অংশগ্রহণ করা। কে ডাকলো তা না দেখে কেন ডাকলো তা দেখা। আর যদি সে ডাক হয় হেফাজতে ইসলামের তাহলে তো “নুরুন আলা নূর”।
কিন্ত বড় পরিতাপের সাথে বলতে হচ্ছে একজন কওমী ঘরনার মিডিয়া পার্সন, তিনি আমার প্রতিষ্ঠান নিয়ে আজ এক ডাহা মিথ্যা সংবাদ প্রচার করেছে। আমার প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদেরকে নাকি ঐ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। অথচ এ ব্যাপারে কাউকে নিষেধ করার কোনো প্রশ্নই আসেনা। তবে সময় স্বল্পতার কারণে ছাত্রদেরকে কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়নি। যদি নয়টার ফোনটি সকাল ছয়টায় পেতাম তখন আমাকে এবং সকল ছাত্রদেরকে বায়তুল মুকাররমে উপস্থিত দেখা যেত ।
আমি মনে করি দায়িত্বশীল কওমী ঘরানার কোন ব্যক্তি এমন মিথ্যাচার করতে পারেনা। একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে এমন অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের বিচারভার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম। لعنة الله علي الكاذبين ( মিথ্যাবাদীদেরউপর আল্লাহর অভিশাপ)
আরো বড় দুঃখের বিষয় , বিগত বৃহস্পতিবার ছাত্রদের অধিক অনুপস্থিতি দেখে মারকাজের কানুন অনুযায়ী মারকাজের কানুন লঙ্ঘন করে যারা এলোমেলো করেছে তাদের জন্য কানুনী গেরেফত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। যেটা প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যাপার। ঐ মিডিয়া পার্সন এই বিষয়টি নিয়ে উস্কানিমূলক সংবাদ প্রচার করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এর অর্থ কী দাঁড়ায়!? তাহলে কী কার প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে, কখন কী কানূন প্রয়োগ হবে তাও কি তাকে জিজ্ঞাসা করে করতে হবে? বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। অবশেষে আমি অনুরোধ করবো দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে এত বেশি নাক গলানো মোটেই উচিত নয়। كلكم راع و كلكم مسؤول عن رعيته এই হাদীসের উপর দৃষ্টি রাখা উচিত ।
দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা কাওমী মাদারেসকে সকল ষড়যন্ত্র থেকে হেফাজত করুন । আমীন।”
source https://deshdunianews.com/%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%98%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%93-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%ab%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%9c/
0 Comments