মাওলানা মামুনুল হক; সম্ভাবনা ও সমালোচনা

জিয়া আল হায়দার।

শায়খুল হাদিসের ছেলে না হলে মামুন ভাই ভারত্বে, ইলেমে, বয়সে ওয়াজ মাহফিলের বাইরে এখনই আলোচনায় আসার মত কোন ব্যাপক গ্রহণযোগ্য কওমী মুরুব্বী এবং ইসলামিক স্কলার হয়ে উঠেন নি । বস্তুত: ঢাকায় অবস্থান, পিতার মাদ্রাসায় হাদিস পড়ানোর সুযোগ, পিতার দল মজলিসের যুব শাখার সভাপতি (এখন এটি নাকি স্বতন্ত্র স্বাধীন সংগঠন) এসব জন্মের ভাগ্যে তিনি অল্প বয়সের একজন কনিষ্ঠতম শায়খুল হাদিস বলে মনে করা হয়।

তার সবচেয়ে বড় কোয়ালিটি হচ্ছে দরাজ গলার সুউচ্চ স্পষ্ট উচ্চারণ। আল্লাহ তাআলা তাকে ভরাট এক কণ্ঠস্বর দিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ। তবে এটাকে তিনি প্রায়ই ক্ষেত্রে বিনা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। এই ভরাট কন্ঠ দিয়ে অতি সহজে ইসলাহী মজলিসে বিপ্লবের হুংকার দেন, শোকসভাকে পরিণত করেন পল্টনের জনসভায়, সাধারণ ধর্মীয় মাহফিলকে শাপলা চত্বরের নাস্তিক বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ বানান। বিষয়টা দৃষ্টিকটু ঠেকে। ইসলাম সম্পর্কে বুঝতে জানতে চাওয়া সচেতন মানুষদের জন্য তার বয়ানে হুমকি-ধমকি চিৎকার-হুংকার ছাড়া দ্বীনের তেমন গভীর সৌন্দর্য বা শান্ত স্থীর দিক খুঁজে পাওয়া যায় না। হাদিস-কোরআনের রেফারেন্সের চেয়ে, রাজনীতিকে প্রজ্ঞাপূর্ণভাবে বিশ্লেষণের চেয়ে তার বক্তৃতায় ক্ষোভ- বিদ্বেষ- হুমকি এবং “শায়খুল হাদিসের রুহানী সন্তানেরা গর্জে উঠবে” জাতীয় উত্তেজক স্লোগান বেশি শোনা যায়। যেখানেই তিনি মাইক্রোফোন পান;পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুষ্ঠানের ধরন বিবেচনা না করে বিপ্লবের ডাক দিয়ে বসেন।

ধারণা করা হয়, কওমি অঙ্গনকে প্রতিনিধিত্ব করার মত বয়স, প্রজ্ঞা ও গ্রহণযোগ্যতা এখনো তার মাঝে খুব একটা বিল্ডআপ হয়নি। তবে তিনি এ অঙ্গনকে প্রতিনিধিত্ব করতে বেশ আগ্রহী মনে হয়। বেফাক, হাইয়া, হাটহাজারী, হেফাজত ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে তার অতি উৎসাহী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। শাপলা চত্বরে নিরীহ মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে বন্দুকের নলে ফেলে পালিয়ে যাওয়া চিহ্নিত কিছু বিতর্কিত মানুষদের সাথে তার দহরম মহরম তার শুভাকাঙ্খীরা পছন্দ করেনা। হেফাজত ইস্যুতে সিনিয়র ও বরেণ্য অনেক মুরুব্বী কে টপকিয়ে তিনি যেভাবে দৌড়ঝাঁপ করেন, তাতে মনে হতে পারে হেফাজতের নেতৃত্ব নিতে তিনি বেশ মরিয়া। তার চেয়ে বহু প্রজ্ঞাপূর্ণ ব্যক্তি কওমি মাদ্রাসায় অনেকেই আছেন। কিন্তু পারিবারিক ঐতিহ্য এবং ঢাকায় অবস্থান না হওয়ার কারণে প্রজ্ঞায় বয়সে এলেমে ধারে- ভারে গ্রহণযোগ্যতায়, নিরপেক্ষতায় টাইটুম্বুর হলেও তারা আলোচনার আড়ালে পড়ে আছেন।

যাই হোক, সম্প্রতি তাকে নিয়ে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। খাটিয়া ইস্যুতে তাকে অনেকে দোষারোপ করেন, কেউ কেউ ছবি ছেড়েছেন যে তিনি জামায়াত নেতাদেরকে নিয়ে হেঁটে হেঁটে হাসতে হাসতে ডাকবাংলোতে এসে তাদেরকে এই পরিবেশটা হয়তো তৈরি করে দিয়েছেন। খাটিয়া ধরার বিষয়টা অযথা বিতর্ক ও সংকীর্ণতা হলেও কওমীদের অঙ্গনে এটি যে একটি সেনসিটিভ বিষয় হয়ে দিড়িয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নাই। তাছাড়া হেফাজত- জামাতকে গুলিয়ে শরবত বানিয়ে গিলে ফেলার একটা চক্রান্ত বামপন্থী মিডিয়া পাড়ার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। তারা এখন এটাকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করছে।

যাই হোক আমার মনে হয় যুবনেতা এবং এরশাদ হয়ে মহাজোটের লেজুড়বৃত্তি করা রাজনীতিবিদ মামুন ভাই এজন্য দায়ী নয়। আপনার সামনেও যদি কেউ কারো খাটিয়া ধরে আপনি তাকে নিষেধ করতে পারবেন না।

তবে এই অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় তিনি যেই স্ট্যাটাস দিয়েছেন সেখানে প্রজ্ঞার যথেষ্ট অপরিপক্কতা দেখা গেছে। মামুন ভাই ইনিয়ে বিনিয়ে নিজের কাছ থেকে দায় সরানোর জন্য (অবশ্যই তিনি এর জন্য দায়ী না,তার এমন ওয়াজহাত দরকার ও ছিল না) এই ঘটনার জন্য কয়েকটা পক্ষকে পর্যায়ক্রমে দায়ী করলেন। তারমধ্যে খুব হাস্যকরভাবে ইসলামী আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবকদের তিনি শেষে টেনে আনলেন। অথচ একজন শিশুও এটা জানে স্বেচ্ছাসেবকরা মুসল্লিদের শৃঙ্খলা এবং জরুরী প্রয়োজনে রেসপন্স করার জন্য। তারা জানাজা বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের মালিক নয়। তারপরও তিনি সরাসরি পোশাক পরা কাউকে দেখে ইসলামী আন্দোলনের উপর এই দায় চাপালেন। এতে ইসলামী আন্দোলনের প্রতি তার একধরনের বিরাগ প্রকাশ পেয়েছে। অথচ তার শাইখুল হাদীস পিতার সাথে ইসলামী আন্দোলন জনকের ছাত্র-শীর্ষ এবং রাজনৈতিক সহকর্মীর খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি এ সম্পর্কটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারতেন।

জামিয়া রাহমানিয়াতে মামুন ভাইদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠা নিয়ে কেউ কেউ আপত্তি তোলেন। যেখানে জোরপূর্বক সাহেবজাদাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একটা অপ্রমাণিত ইতিহাস শোনা যায়। শাইখুল হাদিসের শেষ সময়ে তাকে দিয়ে আওয়ামী লীগের মরহুম আব্দুল জলিলের সাথে রাজনৈতিক আঁতাত করানোর অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে ঠিক যেমন আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে আল্লামা শফীকে ব্যবহারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। মাওলানা মনসুর সাহেব কে বিশৃঙ্খলা করে রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ছাত্রজীবনে তিনি কি এক কারণে একবার বহিস্কৃত হয়েছিলেন।

হাটহাজারীর নজিরবিহীন ছাত্রবিক্ষোভে ওস্তাদের কক্ষ ভাঙচুর এবং শতবর্ষী আল্লামা আহমদ শফী রহিমাহুল্লাহকে অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়ার উস্কানিদাতা হিসেবে মামুন ভাইয়ের নাম বিভিন্ন মহল থেকে উচ্চারিত হচ্ছে। যদিও এটি প্রমাণসিদ্ধ নয়। তবে তথাকথিত বিতর্কিত ইসলাহী মজলিসে তার প্রদত্ত বক্তব্য, বেফাক ও কওমী নিয়ে তার অতিমাত্রায় উৎসাহ, শাপলা চত্বরে আঁতাতের অভিযোগে অভিযুক্ত কিছু বিতর্কিত মুখ নিয়ে মধ্যরাতে তার লাইভ প্রোগ্রাম, কওমির কাছে অস্পৃশ্য ও অচ্যুত জামায়াতের সাথে তার গোপন আঁতাত এবং আত্মীয়তার, অভিযোগ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংকীর্ণ মনোভঙ্গি, কারো কারো প্রতি তার অনুরাগ ও বিরাগের বহিঃপ্রকাশ তাকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দিয়েছে।

এসমস্ত বিতর্কের কোনটাই নিয়মতান্ত্রিক প্রমাণে ভ্যালিড না। তারপরও শাইখুল হাদীসের সন্তান হিসেবে যেভাবেই হোক যেহেতু তিনি একটা ফোকাসের জায়গায় আছেন তাকে আরো বেশি সতর্কতা ও প্রজ্ঞার পরিচয় দেয়া উচিৎ ছিল। প্রয়োজন ছিল যথা সম্ভব বিতর্ক থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার।হেফাজত নিয়ে বেফাক নিয়ে তার এত দৌড়ঝাঁপ এবং অতি উৎসাহ তার দিকে সন্দেহের বহু তীর নিক্ষিপ্ত করেছে। বারিধারা মাদ্রাসায় শোক সভার মঞ্চ থেকে শোক গাঁথার পরিবর্তে হাটহাজারী বিপ্লবকে(!) সারা বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি মেজাজে দেওবন্দ ও কওমী ঐতিহ্যের সাথে একেবারেই বেমানান।

অনেকে ধারণা করেন হাটহাজারী বিক্ষোভের যে স্টাইল ছিল সেটি অতীতে জামেয়া রহমানিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হলো কিনা। আবার তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার বিশৃংখল ছাত্র বিক্ষোভ কে (যদিও এর প্রারম্ভিক আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল এবং তাদের দাবিগুলোও যৌক্তিক) তিনি পরম কাঙ্ক্ষিত একটি “বিপ্লব” বলে আখ্যায়িত করেন কি করে? এটা কি তার কাছে কাঙ্ক্ষিত ছিল অথবা এটা কি তাঁর পরিকল্পনা কিংবা ইঙ্গিতে সংঘটিত হয়েছিল তা না হলে তিনি কেন একটি ছাত্র বিক্ষোভ কে “বিপ্লব” শব্দে ব্যাখ্যা করলেন। মনে মনে কি তিনি এই বিপ্লবের স্বপ্ন বহুদিন থেকে পুষে আসছেন? শুধু তাই নয়, এই তথাকথিত বিপ্লবকে তিনি সারা বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলোতে ছড়িয়ে দেয়ার প্রকাশ্য ঘোষণা দিলেন কোন দুরভিসন্ধি থেকে?এটা কি খুব শুভ কিছু বয়ে আনবে?

আল্লামা শফী র, সাহেবের সাথে শেষ মুহূর্তে কিছু উশৃংখল এবং বেয়াদবি পূর্ণ আচরণ হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। আল্লামা শফী র, সর্বজন শ্রদ্ধেয় হাটহাজারীর দীর্ঘদিনের বরেণ্য মুহতামিম ছিলেন। তার মুহতামিমী নিয়ে কারো কোনো আপত্তি ছিল না। শেষ মুহূর্তে তাকে কেন পদত্যাগে বাধ্য করা হলো?তিনি তো দুইদিন আগে পরে এমনি দুনিয়া থেকে চলে যেতেন আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে তো তখনও আন্দোলন করা যেত। শফি সাহেবকে মুহতামিম থেকে সরানোর এত তাড়াহুড়া কেন ছিল? তার মৃত্যু নিয়ে যে প্রশ্নগুলো উঠেছে সেগুলো অযৌক্তিক এবং আরেক মহলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে তার প্রতি যে সম্মান প্রদর্শন করা হয়নি এটি সুনিশ্চিত।দাবি পূরণের জন্য সূরা সদস্যরা সময় নেয়ার পরও একটি বৈঠক শেষে আরেকটি বৈঠকের প্রস্তুতিকালে শিক্ষকদের কক্ষ ভাংচুরের প্রয়োজন কেন পড়লো? একাত্তরের টকশোতে তিনি সেই ভাঙচুরকে এক ধরনের সমর্থন দেয়ার চেষ্টা করলেন! যৌক্তিক প্রশ্ন পাশ কাটিয়ে গেলেন! এমন কি যখন এই বিশৃংখলার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত তিনি চান কিনা, মিথিলা ফারজানা এমন একটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন উত্থাপন করে মামুন ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন; সে বিষয়েও তিনি নীরব থাকলেন!

মামুন সাহেব একজন বিচক্ষণ তরুণ আলেম ও রাজনীতিক। পরে বড় ভাই মাহফুজুল হক এর চেয়েও তিনি বেশি ফেমাস। তার উপস্থিতিতে শাপলা ম্যাসাকারের পর লন্ডন পালিয়ে যাওয়া জুনায়েদ হাবিব সাহেব যখন বারিধারা থেকে হেফাজতের কন্ট্রোলিং নিয়ে নিচ্ছিলেন এবং বারিধারার শোকসভা মঞ্চের বাইরে সবাইকে দালাল আখ্যায়িত করেছিলেন মামুন ভাই কি এটা মেনে নিয়েছেন নাকি প্রতিবাদ করেছেন?বারিধারা কি বাংলাদেশের সমগ্র কওমি মাদ্রাসার প্রতিনিধিত্বশীল কোন স্থান?সেখানে উপস্থিত ওলামায়ে কেরাম কি সারা বাংলার কওমি মাদ্রাসার ওলামা ও তালাবার শীরে তাজ? এমন প্রশ্ন করলে তিনি হয়তো দায় এড়াবেন, তিনি বলেন নি। কিন্তু এমন কথা যারা বলতে পারে এমন চরমপন্থী কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী লোকজনের সাথে তার কিসের এত সম্পর্ক?কেন তাকে তাদের সাথে সব সময় ঘুরতে ফিরতে দেখা যায়?

মামুন ভাইর সামনে বিশাল সম্ভাবনা আছে। তার বয়স কম। তার গলার যথেষ্ট জোর আছে। আমি মনে করি তিনি ভাল মুহাক্কিক আলেম। সাধারণ কওমি ছাত্ররা তাকে আগামীর বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এবং বাতিলের আতংক হিসেবে নিরপেক্ষ ভূমিকায় দেখতে চায়। ঠিক যেমন তার পিতা কওমীদের অবিসংবাদিত নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। মাহফুজ ভাই এবং মামুন ভাই সম্ভ্রান্ত বংশের ঐতিহ্য বাহী পরিবারের সজ্জন ব্যক্তি বলে জানি। তাকে অনেকে উদার হিসেবে জানেন। কাজেই
তার বয়ান গুলোতে অযথা চিৎকার চেঁচামেচির পরিবর্তে জ্ঞানগর্ভ তাত্ত্বিক আলোচনা নিয়ে আসতে হবে। নেতৃত্বের প্রতি এত অল্প বয়সে কোন ধরনের আগ্রহ এবং ফোকাসে থাকার চেষ্টা বাদ দিতে হবে। তিনি যেহেতু নেতার ছেলে নেতৃত্ব তিনি এমনিতেই দৌড়ঝাপ না দিলেও পাবেনই। কওমি ছাত্রদের একটি বড় অংশ তার ফ্যান।একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল মজলিসের তিনি ভবিষ্যৎ কান্ডারি। আওয়ামী লীগ বিএনপি জামায়াত সবার সাথে তিনি একই সময়ে সুসম্পর্ক রেখে চলতে জানেন। কাজেই তার ধর্মীয় ক্যারিয়ার এবং রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অতি উজ্জ্বল। কওমি ও জাতীয় রাজনীতিতে তিনি আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবেন। সেজন্য তাকে আরো একটু অপেক্ষা করতে হবে। এ সময় তিনি নিজেকে আরো বেশি উদার, প্রজ্ঞাবান, জ্ঞানী ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার সুযোগ পাবেন। কিন্তু তিনি যেভাবে বিতর্কিত লোকজন নিয়ে চলাফেরা করেন তাতে তার গ্রহনযোগ্যতা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়। একদিকে তার সাথে জামায়াতের আঁতাতের অভিযোগ অন্যদিকে এরশাদের জোটভুক্ত হয়ে মহাজোটের সাথে তার রাজনৈতিক সমঝোতা, তার মাদ্রাসার সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা নানক সাহেব। আবার বিএনপিপন্থীদের সাথেও তার দহরম মহরম সম্পর্ক। এসব কারণে কওমির সাধারণ ছেলেরা তাকে আস্থায় নিতে পারছে না। অনেক দিক থেকে কওমীরা তাকে বৃহত্তর ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থের চেয়ে কারো কারো ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে ব্যবহৃত হচ্ছেন কিনা এমন সন্দেহ পোষণ করে।

মামুন ভাইকে নিয়ে সৃষ্ট এসমস্ত ধুম্রজাল তাকেই ছিন্ন করতে হবে। কওমিতে এমন একজন সিংহের গর্জন দেয়ার মতো তরুণ নেতার প্রয়োজন আছে। কিন্তু তর্জন গর্জন বিপ্লব বিদ্রোহ-বিক্ষোভের পূর্বে তাকে অবশ্যই নিজেকে তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য করে গড়ে তোলার সময়টুকু নিতে হবে। আর একটু ‘ধীরে চলো’ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে। কওমিতে যিনি তাড়াতাড়ি পপুলার হন তাকে এই কওমী আবার তাড়াতাড়ি হেনস্থা করে ছাড়ে। তিনি এসব জানেন। কওমির আগামী কান্ডারী শাইখুল হাদিস মাওলানা মামুন ভাইয়ের জন্য শুভকামনা। মামুন ভাই একজন জাতীয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু তিনি নিজের হাতে নিজের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিচ্ছেন মনে হচ্ছে। তাই অনেকটা একরোখাভাবে সরাসরি ব্যক্তিকে ধরে এই কথাগুলা বলা। আমি স্বীকার করছি এর সব কথাই হয়তো মামুন ভাইয়ের সাথে প্রযোজ্য নয়। তবে এমন কানাঘুষা ও সন্দেহের ডালপালা তিনি ভেঙ্গে ফেলবেন এবং কওমি তারুণ্যের বিপ্লবী চেতনার বিশ্বস্ত কান্ডারী হিসেবে তিনি উঠে দাঁড়াবেন এটা আমার একান্ত চাওয়া। দুঃখিত মামুন ভাই! আপনার সমুজ্জ্বল ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা করি।আপনার হাত ধরে কওমি তার হৃতগৌরব ফিরে পাবে আশা করি।



source https://deshdunianews.com/%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%95-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%ad%e0%a6%be/

0 Comments