গত ২৯ জুলাই বুধবার দেশ দুনিয়া নিউজের উদ্যোগে “কেমন হবে অপূর্নাঙ্গ শিক্ষাবর্ষে সিলেবাস, পাঠদান ও পরীক্ষা পদ্ধতি?” বিষয়ে ফেসবুক আলাপন ৩য় পর্বে লাইভ প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন যুগসচেতন ও বিজ্ঞ আলেমেদ্বীন, ঢাকা শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, আল্লামা মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ হাফিজাহুল্লাহ৷
তিনি সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন৷ দেশ দুনিয়া নিউজের পাঠকদের জন্য তার গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো ধারাবাহিকভাবে শ্রুতিলিপি হিসেবে পেশ করা হচ্ছে ৷
সঞ্চালকের প্রশ্ন: কওমী মাদ্রাসাগুলো খোলার পর গত শিক্ষাবর্ষের পরিক্ষাগুলো নেয়া হবে কিনা? নিলে পদ্ধতি কী হবে?
জবাবে আল্লামা মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ হাফিজাহুল্লাহ: এটি একটি বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা যার অনেকগুলো দিক রয়েছে ৷ এ বিষয়ে বড়দের মজলিসে বললেই শোভা পায় ৷ তবুও আমি আমার ব্যক্তিগত মতামতকে প্রস্তাবনা হিসেবে ব্যক্ত করছি ৷
তিনি বলেন, আমি মনে করি মাদ্রাসা খোলার পর প্রথমেই মিশকাত ও দাওরায়ে হাদিস জামাতের পরীক্ষা নিতে হবে ৷ অন্যান্য জামাত (ক্লাসের) পরীক্ষা না হলেও চলবে ৷ সেসব জামাতে/ক্লাসে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার ফলাফল দেখে পাশ-ফেল এর সিদ্ধান্ত দেয়া যাবে৷ এই রেজাল্ট দিয়ে ছাত্ররা উপরের জামাতে উত্তীর্ন হবে ৷ এতে তেমন কোন সমস্যা হবেনা ৷
কিন্তু মিশকাতের পরীক্ষাটি জরুরী, যেহেতু সমস্ত শিক্ষা বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, মিশকাতে উত্তীর্ন হওয়া ছাড়া দাওরায়ে হাদীস পড়তে পারবে না ৷ আর দাওরা’র পরীক্ষা তো অবশ্যই জরুরী, যেহেতু এর সাথে সনদ/সার্টিফিকেটের সম্পর্ক রয়েছে৷
যেদিন হাইয়াতুল উলিয়ার পক্ষ থেকে মাদ্রাসাগুলো খোলার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, আমি চেয়েছিলাম সেদিনই পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে দেয়া হোক ৷ যেহেতু আমি মনে করেছিলাম মাদ্রাসা খোলার ঘোষণাটি কর্তৃপক্ষের যথাযথ দায়িত্ববোধ সম্পন্ন সিদ্ধান্ত৷ তখনও পর্যন্ত আমার নিকট এ সম্পর্কে বিস্তারিত সংবাদ পৌছেনি৷ বিস্তারিত জানার পর আমি আমার মতামত পরিবর্তন করলাম এবং মনে মনে আল্লাহর শোকর আদায় করলাম যে, যাক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়নি ভালই হয়েছে৷
এখন আমার মনোভাব হলো, আগে দেখা যাক ৮ আগষ্ট মাদ্রাসা খোলা হয় কিনা৷
যদি যথাসময়ে মাদ্রাসা খোলা হয় তাহলে হাতে ৮-১০ দিন সময় রেখেই পরীক্ষার ঘোষণা দেয়া যাবে এবং মিশকাত ও দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা নেয়া যাবে ৷
এক্ষেত্রে আমার প্রস্তাবনা হলো, মিশকাত জামাতের সব কিতাবের পরিক্ষা নেয়ার দরকার নাই ৷ যে কিতাবগুলো মাওকুফ আলাইহি তথা মূল কিতাব সেগুলোর পরীক্ষা হবে৷ আবার পরীক্ষা হবে খুব সংক্ষেপে৷ মাত্র চারদিনের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে৷ সকাল-বিকেল পরীক্ষা হবে৷ প্রত্যেক পরীক্ষায় দুইটি করে প্রশ্ন থাকবে৷ প্রতিটি প্রশ্নের মান হবে পঞ্চাশ৷ এক বিষয়ে চার-পাঁচটি প্রশ্নের প্রয়োজন নেই৷ তবে প্রশ্নে একাধিক জুয বা অংশ থাকতে পারে৷ যেমন আলিফ, বা, যিম হিসেবে আমরা দিয়ে থাকি৷ এভাবে করলে পরীক্ষা নেয়ার কাজটিও হবে, পাশাপাশি ছাত্রদের জন্যও পরীক্ষা দেয়া সহজ হয়ে যাবে ৷
এবার দাওরায়ে হাদীসের পরীক্ষার প্রস্তাবনাঃ এক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হলো, দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা পূর্ণাঙ্গভাবে অবশ্যই হতে হবে ৷ এখানে কোন কমতি করা যাবেনা৷ যেহেতু তাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে ৷ তাছাড়া এটি তাদের অনেকের জন্য জীবনের শেষ পরিক্ষাও হতে পারে৷ তবে এক্ষেত্রেও কিছুটা সহজ করা যেতে পারে৷ যেমন প্রশ্ন পরিমাণ কমিয়ে দেয়া যেতে পারে অথবা কোন কোন কিতাবের মৌখিক পরীক্ষা হতে পারে৷ মূল কথা হল, পরীক্ষা হওয়া আবশ্যক৷ এটা হতেই হবে৷ পরীক্ষা নিয়ে এটাই আমার প্রস্তাবনা৷
অন্যান্য জামাতের পরীক্ষা -আমি পূর্বেও বলেছি- না হলেও চলবে৷ যেহেতু মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা বোর্ড খুব কমই আছে, যেগুলো আছে সেগুলোর পরীক্ষা না হলে তেমন কোনো সমস্যা হবে না ৷ মাদ্রাসার দ্বিতীয় পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে তাদের তারাক্কি দেয়া যাবে৷
শ্রুতি লিখন:
মুফতী সালাহুদ্দীন আইয়ুবী
ছাত্র, শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার
সহযোগী সম্পাদক, দেশ দুনিয়া নিউজ
source https://desh-duniyanews.com/%e0%a6%95%e0%a6%93%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b7-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%b2%e0%a7%8d/
0 Comments