মাওলানা আবদুর রাজ্জাক।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে। এই দীর্ঘ সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সাংগঠনিক মজবুতি, সম্প্রসারণ ও যোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে অনেকটা সক্ষম হয়েছে। ইসলামী আন্দোলনের ভেতরে যারা আছেন তারা শুধু এর ভালো দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। অথচ এর গঠনমুলক সমালোচনার জন্যও একদল বুদ্ধিজীবী থাকা প্রয়োজন। তবে যারা ইসলামী আন্দোলনের সমালোচনা করে তারা কিন্তু মনের আক্রোশ থেকেই করে। ইসলামী আন্দোলনের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে একে পথ দেখায় না।
অত্যন্ত আনন্দের বিষয় হচ্ছে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ভেতরেই ছাত্র আন্দোলন থেকে গড়ে উঠা কিছু তরুন বুদ্ধিজীবী ইসলামী আন্দোলনকে সেই পথ দেখাচ্ছে। যেই পথ ধরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সংগঠন হিসেবে তার স্থান করে নিতে পারে।
আমাদের শেখ ফজলুল করীম মারুফ , জিয়া হায়দার, ছগীর চৌধুরী তাদের অন্যতম, যারা গঠনমূলক সমালোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনকে পথ দেখাবে।
ইসলামী আন্দোলন প্রতিষ্ঠার সময় থেকে আজ অবধি এক অবস্থায় থাকতে পারেনা। প্রেক্ষাপট পরিবর্তন ও সংগঠনের উন্নতির সাথে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান ও চলার পথও বদলাতে হবে। আমাদের এই তরুণ বুদ্ধিজীবীরা সেই পরিবর্তনই চাচ্ছে।
তবে তাদের দেখানো পথ ও তাদের লেখার যে পর্যালোচনা হতে পারবে না বিষয়টি এমন নয়। যেমন সগীর ভাই সম্প্রতি এক পোস্টে ‘ইসলামী আন্দোলনের জন্য মুজাদ্দেদী মডেল অনুসরণে’র কথা বলেছেন। যার ব্যাখ্যায় তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, আধ্যাত্মিকতা এবং রাজনীতিকে পৃথক করণ। যে লেখাটি পাঠ করে আমাদের নেতাকর্মীদের মাঝে খটকা তৈরি হবে, ইসলামী আন্দোলনের মূল নেতৃত্বকে বিভক্ত করা।
পরিষ্কার ভাষায় বলছি। ছগীর ভাইর লেখাটি পড়ে একদল নেতা-কর্মী এমন তৈরি হয়ে যাবে, যারা মুজাহিদ কমিটির আমির হিসেবে পীর সাহেব চরমোনাইকে আর ইসলামী আন্দোলনের আমির হিসেবে নায়েবে আমিরকে প্রস্তাব করা শুরু করে দেবে। অথচ মুজাদ্দেদে আলফেসানীর সমকাল আর বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এক নয়।
আমি এখানে শুধু একটা বিষয় আলোচনা করবো। বাংলাদেশের ইসলামিস্টদের সংস্কৃতি হয়ে গেছে, ভক্তি থেকে বিভক্তি। আমি আমার আগে একটি লেখায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেছিলাম। বাংলাদেশের ইসলামী বিপ্লবের অন্যতম অন্তরায় হচ্ছে ভক্তি। কারণ ভক্তি থেকেই বিভক্তি।
ইসলামী আন্দোলনকে মহান আল্লাহ এ যাবৎ হেফাজত করেছেন। এখন যদি দুই জন দুই দিকের আমির হন, তাহলে এখানেও ভক্তি থেকে বিভক্তি সৃষ্টি হয়ে যাবে, যা আমাদের কারো কাম্য নয়।
বাস্তব কথা হলো, বর্তমান ইসলামী আন্দোলনেও মোজাদ্দেদী মডেল অনুসৃত হচ্ছে। তবে সেটি হচ্ছে সংস্কারকৃত মুজাদ্দেদী মডেল। মোজাদ্দেদে আলফেসানীর মডেলকে কিছুটা সংস্কার করেছেন আরেক মুজাদ্দিদ শায়খ ফজলুল করিম রহ.। বর্তমান বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের জন্য শাইখ ফজলুল করিম রহ. এর সংস্কারকৃত মডেলই বাস্তবসম্মত কার্যকরী মডেল।
লেখক: সম্পাদক, দেশ দুনিয়া নিউজ
source https://desh-duniyanews.com/%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a6%e0%a7%80-%e0%a6%ae%e0%a6%a1%e0%a7%87%e0%a6%b2-%e0%a6%ae%e0%a6%93%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%80-%e0%a6%ae/
0 Comments