মাওলানা সামসুদ্দোহা তালুকদার।
বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন প্রচেষ্টা সাধারণ কোন ঘটনা নয়। এটা কোন লোকাল ইস্যু নয়। এর পিছনে একদল কালপ্রিট সুশীল আছে, যারা ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটির নাম বদলের মাধ্যমে নিজস্ব আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
তারা অতি সুশীলতার ভান করে ওপার বাংলাকে দেখাতে চায়, তারা দালালীতে পাকনা হয়ে উঠছে। তারা জানান দিবে, এখন পরিকল্পনার বাকীটা নিয়ে আগাতে পারেন। অশ্বিনী কুমার দত্তকে ভালবেসে তারা এ কাজটা করতে চাচ্ছে না। তারা এটাকে সাংস্কৃতিক বিজয় ভাবতেছে। যে সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে মরিয়া বর্তমান সমাজে। এক্ষেত্রে কিছুটা সফলও হয়েছে।
সনাতন বাঙ্গালী জাতির সংস্কৃতির নামে যা হচ্ছে তা আসলে মুসলমানদের আদর্শ বিনাশী সংস্কৃতি। সরকারটা যে তাদের প্রতি খুব সহানুভূতিশীল! আস্কারাটা তো ওখান থেকেই। বরিশালের কতক রাজনৈতিক নেতা তো উপরে উপরে নামবদল প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে বলে, কিন্তু দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কাজটা আদায় করতে তদবির করে। নগরবাসীর রোষাণল এড়াতে তারা এ অপকৌশল করছে। তাদের ছাত্র সেনারা সব জায়গায় এত তৎপর থাকে, বাপের আগে আগে হাঁটে, এ ব্যাপারে তো তাদের আহ্ উহ্ পরিদৃষ্ট হচ্ছে না। মূলতঃ তারাও যে একই সংস্কৃতির সেবক!
আসলে তারা ধীরে ধীরে অপসংস্কৃতির বিপ্লব ঘটাতে চায়। এ দেশের বাম-রাম যোদ্ধারা ষোলআনা আদর্শহীন ও ধর্মবিদ্বেষী পান্ডা। বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন তাদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ।
তবে আশার কথা, বর্তমান বাংলাদেশে বাঙ্গালী সংস্কৃতি আমদানীর নামে পাপাচারে ভরা নৈতিকতাহীন সংস্কৃতি আমদানী রোধ করার মত সিপাহসালার এ ভূ-খন্ডে রয়েছে। বরিশালের ঐতিহ্যকে অপবিত্র করতে দেয়া হবে না।
বাপুরা! তোমরা অশ্বিনী বাবুকে যদি এতই ভালবাসো, তাহলে তার নামে চান্দা তুলে একটা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় খাড়া করে দেখাও তো! পারবা না। “তৈয়রটার উপরে ময়ূর নাচ” করতে দেয়া হবে না। ইনশাআল্লাহ!
গতকাল বরিশাল ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণ পরিষদের গোলটেবিল আলোচনায় আহবায়ক মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়েখে চরমোনাই দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে উচ্চারণ করেছেন-
“বরিশালের ইতিহাস ঐতিহ্যের উপর কেউ আঘাত করলে আমরা বরিশালবাসী কঠোর হস্তে প্রতিহত করবো ইনশাআল্লাহ।”
তাঁর এমন অভিব্যক্তি ‘নিছক একটি ঘোষনা’ মনে করলে সেটা ভুল হবে। তিনি যা বলেন তা দৃঢ়তার সাথেই বলেন। আল্লাহর রহমতে তাঁর দাবীর বাস্তবায়নও আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন ইস্যুতে।
কতক ভাইরা আঞ্চলিক ইস্যু নিয়ে একজন জাতীয় নেতার আন্দোলনে নামার ব্যাপারে উষ্মা ব্যক্ত করেছেন। ভাইরে! আপনার মগজ নিয়ে তো তিনি রাজনীতি করেন না। এটা মাথায় রাখতে হবে।
আপনি আপনার মত ব্যক্ত করছেন সেটা আপনার অধিকার। তিনি রাজনীতি করেন ভূত-ভবিষ্যত ভেবে। সে দৃষ্টিটা আমাদের থাকার কথা না। বিভিন্ন ইস্যুতে তার অবস্থান ‘সহীহ’ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটা বারবার ঘটেছে। সুতরাং পারলে নায়েবে আমীর হজরতের পাশে থেকে সহযোগিতা করুন। অন্যথায় চুপচাপ দেখতে থাকুন।
জাতীয় ইস্যুতে কথা বলার ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ দেশের পাইওনিয়ার। ভারতীয় আগ্রাসনের ব্যাপারে আইএবি আন্দোলনের মাধ্যমে দাবী আদায়ে কতটা আগ্রাসী, এটা সাম্প্রতিক ইতিহাসই সাক্ষ্য দিবে। হাতপাখা হাতে নিয়ে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক রাজপথ কাঁপিয়ে দেয়। করোনা পিরিয়ড না থাকলে এতদিনে আন্দোলনের ডাক এসে যেতো।
চট্রগ্রাম বন্দরের কর্তৃত্ব এখন বিড়ালের হাতে। সে শুধু মাছ খেতে অভ্যস্ত। মাছের ঢাকনা যারা তুলে দিয়েছে, তারা অন্ততঃ দেশপ্রেমিক নয়। তারা ভারতের তস্য দালাল। এটা এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে। কঠিনভাবে বিশ্বাস করে। নিজ ঘরের বেচারীর দেহ উদোম হয়ে আছে, সেটা বাদ দিয়ে তারা অন্যের দেহ অলংকৃত করছে। এটা আমরা সবাই জানি ও প্রত্যক্ষদর্শী। গোলামেরও তো একটা সংজ্ঞা আছে আসলে তারা কোন কিসিমের গোলাম সেটা বুঝতে বিশ্লেষক না হলেও চলে। গোলামের সংজ্ঞার বাইরের গোলাম।
সেদিন নায়েবে আমীর হজরতে বক্তৃতার একটা পর্যায়ে চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন। আগে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হোক, অতঃপর আন্দোলন সংগ্রামের ডাক দেয়া হবে।
বরিশাল শহর নায়েবে আমীর হজরতের নিজ আসন। এখানকার জনগনের মুখপাত্র তিনি। এখানকার ইস্যুতে কথা বলাই হবে সঠিক কাজ। ‘লোকাল ইস্যু’তে ‘ন্যাশনাল লিডার’ ব্যস্ত থাকার যৌক্তিক কারণ আছে, বিধায় তিনি বরিশালে সময় দিচ্ছেন। যারা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে চিনেন ও জানেন, তাদের মুখ থেকে এমনতর অর্বাচীন কথাবার্তা আশা করা যায়না।
আল্লাহ চাহে তো! তাঁর কাছাকাছি থেকে রাজনৈতিক যোদ্ধা হতে পারলে তাঁর প্রদত্ত রাজনীতির পাঠ শিখতে পারা যাবে। যা দেশপ্রেম ও ঈমান আক্বীদার অংশ বটে। শেখার যে কোন বয়স নাই রে!
source https://desh-duniyanews.com/%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%95%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a6%a6%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%a4%e0%a6%be/
0 Comments