সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, নতুবা বেফাক পুনর্গঠন করব

  • এস.কে নাজমুল হাসান
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল বৃহস্পতিবার ‘বেফাক’ প্রসংগে কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম,শায়খে চরমোনাই এক ভিডিও বার্তায় চলমান বেকাফ সংকট সমাধান করতে পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা সমূহের সর্ববৃহৎ শিক্ষা বোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’ বেফাক-কে ঘিরে বহুমুখী উত্তেজনা চলছে।
এটা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচিত বিষয়। বেফাকের দায়িত্বশীলদের ফোনালাপ ফাঁস, দুর্নীতির অভিযোগ ও বিভিন্ন বিতর্ককে তিনি ‘ওলামায়ে কেরামের প্রতি সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে ফেলার একটি পথ’ বলে মনে করছেন।

চলমান সংকট নিয়ে পীর সাহেব চরমোনাইসহ তিনি উদ্বিগ্ন। দেশের আলেম সমাজ উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে তিনি গতকাল একটি ভিডিও বার্তা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এটাকে ‘আলটিমেটাম’ও বলা যেতে পারে। মেসেজটা এরকম- “আপনারা দ্রুত লাইনে আসেন, অন্যথায় দেশের আলেম ওলামারা করণীয় নির্ধারণ করে সামনে আগাবে।”

শায়খে চরমোনাই বলেন, বাংলাদেশের মাদ্রাসাসমূহের সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী প্ল্যাটফর্ম বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ-এর দায়িত্বশীল ও কর্মকর্তাদের নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অনাকাঙ্ক্ষিত যে বিতর্ক শুরু হয়েছে- বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভিন্ন পক্ষে একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করছেন এবং তা ব্যাপক প্রচার করছেন। এর ফলে পরিবেশ এতোটাই নোংরা করে তোলা হয়েছে যে- সাধারণ মানুষের কাছে বেফাকের ভাবমূর্তি ও গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।

এছাড়াও এ কাজের দ্বারা ওলামায়ে কেরামের প্রতি সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার যে একটি জায়গা ছিল, তা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। সামগ্রিকভাবে যা দেশের সকল ইসলামপন্থীদের জন্য কুফল বয়ে আনতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন – বেফাকের সঙ্গে আমরা সব সময় আন্তরিকভাবে জড়িত ছিলাম ও আছি।

বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কর্তৃক পরিচালিত “বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড” বেফাকের অন্তর্ভুক্ত সহযোগী প্রতিষ্ঠান বলে পদাধিকার বলে আমীরুল মুজাহিদীন হযরত পীর সাহেব চরমোনাই বেফাকের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এবং কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী সাহেব বেফাকের ‘সহকারী মহাসচিব’ দায়িত্বের কারণেই নয়, বরং এদেশের সহীহ ধারার ওলামায়ে কেরামদের দ্বারা নিয়ন্ত্রনকারী একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বেফাকের প্রতি আমাদের নৈতিক ও আদর্শিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।

এজন্যই বেফাকের কোন সংকট তৈরি হলে আমরা বিচলিত না হয়ে পারি না। বর্তমানে আমরা বেশ কিছুদিন ধরে দূর থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।

আমরা ভেবেছিলাম দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সঙ্গে সঙ্গে সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগী হবেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল ও ঘোলাটে হচ্ছে এবং সংশ্লিষ্ট এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কে সারাদেশের ওলামা ও তোলাবারা জড়িয়ে পড়ছে।

আমাদের কাছে ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে নানামুখী অনুরোধ আসছে, বেফাকের সংকট নিরসনে গঠনমূলক কোন উদ্যোগ নেয়ার জন্য। এ মূহুর্তে তাঁদের উচিত- পরিস্থিতির বাস্তবতা উপলব্ধি করে সংকট নিরসনে উদ্যোগী হয়ে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার দূর করে সুশৃঙ্খলার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিবেচনার দিকে তাকিয়ে আছি।

যদি তারা দ্রুত সুশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম না হন, তাহলে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির সুশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং একটি সত্যিকারের সমাধান করতে আমরা দ্রুত দেশের সচেতন ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ করে ‘বেফাক’ পুনর্গঠনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।



source https://desh-duniyanews.com/%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%95%e0%a6%9f-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a4-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%b8/

0 Comments