আয় বন্ধ হওয়ায় মানবেতর সময় পার করছেন রাজধানীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা

শফিকুন্নবী বাইজিদ:
করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপে রয়েছেন রাজধানীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। একদিকে করোনার আতঙ্ক অন্যদিকে ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে আসায় অনেকটা মানবেতর সময় পার করছেন তারা।

করোনার কারণে পর্যুদস্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নিজের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়েও হিমশিম খেতে হচ্ছে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে। এদিকে ব্যবসা না থাকলেও মাস শেষে ঠিকই গুনতে হচ্ছে বাড়ি ভাড়া কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত ভাড়ার টাকা। এদিকে নিজের পরিবারের খরচ আর কর্মচারীদের বেতন নিয়েও অনেক ব্যবসায়ী উদ্বেগের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন।

আজ কথা হয়েছিলো রাজধানীর নয়া পল্টনের একটি ছাপাখানার স্বত্তাধিকারী মনিরুল ইসলামের সাথে। দীর্ঘ ২০ বছর থেকে তিনি এই এলাকায় পরিবার নিয়ে বাস করছেন। শুরুতে অন্যের আওতায় কাজ করলেও পরবর্তীতে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে নিজেই একটি ছোট আকারের ছাপাখানা খোলেন। শুরু থেকেই সেখানে ৬ জন কর্মচারী কাজ করলেও করোনা ভাইরাসের কারণে টানা ৬৬ দিন লকডাউনে কারখানা বন্ধ থাকায় অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেও জুনের শুরুতেই অল্পকিছু বেতন দিয়ে ৪ জন কর্মচারীকে ছাঁটাই করতে বাধ্য হন তিনি।

আশায় ছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার পুরোদমে ব্যবসা শুরু করবেন। কিন্তু আয়-উপার্জন শূন্যের কোঠায় নেমে যাওয়ায় কারখানা ধরে রাখা তো দূরের কথা, নিজের ভাড়া বাসাটাও ছেড়ে দিয়ে পরিবারকে গ্রামে রেখে আসতে বাধ্য হন তিনি। চরম অনিশ্চয়তা নিয়ে চলতি মাসের শুরু থেকে সীমিত পরিসরে কারখানা খুললেও তেমন কাজ পাচ্ছেননা বলে হতাশাও ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মনিরুলের মতো এমন অনেক মানুষ, যারা বহুদিন ধরে জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় বসবাস করছিলেন পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের অনেকেই ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা শহরের অনেক বাড়িতেই বেড়ে গেছে ঝুলে থাকা টু-লেট-এর বিজ্ঞাপন। অনেক বাড়িতেই ভাড়াটিয়া নেই বলে একাধিক ফ্ল্যাট খালি আছে।

করোনার কারণে নিম্নআয়ের মানুষ যতটা বিপদে আছেন তার চেয়ে বেশি বিপদে ও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। তারা না পারছে নিজেদের সামাজিক অবস্থান ধরে রাখতে, না পারছে কারো কাছে হাত পাততে।

ব্র্যাকের গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, চাকরি হারানো ৩৬ শতাংশ ব্যক্তির বেশিরভাগ অংশই ঢাকার ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে শুরু করেছেন। অনেকে আবার বেশি টাকায় ভাড়া নেওয়া বড় ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়ে ছোট ফ্ল্যাট বা সাবলেটে ভাড়ায় উঠছেন। আবার কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের মালামালসহ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে মেসে উঠছেন খরচ কমানোর জন্য।



source https://deshdunianews.com/%e0%a6%86%e0%a7%9f-%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a7-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%a4%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%9f/

0 Comments