স্বপ্নের ফেরিওয়ালা; হাবিবুর রহমান মিসবাহ

নকিব মুহাম্মদ রিজওয়ান:

মাওলানা হাবিবুর রহমান মিসবাহ। দরাজ কন্ঠে বাতিলের তখত কাঁপানো এক নাম। তিনি স্বাপ্নীক। শব্দচাষী। গদ্যশিল্পী। কথারসিক। দায়িত্বশীল মানুষ। অনেক তরুণের গাইডার। রত্নগর্ভ। সুবিদিত একটি নাম। এককথায় ওয়ায়েজ, লেখক,গবেষক ও খিদমাতে খলকের দৃষ্টান্তহীন মানুষ। তুলনামূলক গবেষণামূলক কথাই মঞ্চে বেশী বলেন। ফিতনা যেখানে মিসবাহ সাহেবের দ্ব্যর্থহীন কন্ঠ অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মত সেখানেই জ্বলে ওঠে। অসহায় মানুষের আর্তনাদে ‘তাওয়াক্কুলতু আল্লাহ’ বলে এগিয়ে আসেন।

যাপিত জীবনে তিনি একজন মজার মানুষ । তার সহাস্যমুখ সবার চেনা। কুয়াকাটায় স্থায়ী নিবাস। কর্মের দৌড়ে ঢাকায় ক্ষণস্থায়ী বসবাস। অনেক বছর আগে বাড়ির পাশে এক জায়গায় তার বয়ান শুনে আপ্লুত হই। কান্নাজড়িত কন্ঠে দিশেহারা – উদভ্রান্ত যুবকদের ডেকে বেড়ান আল্লাহর দিকে।

মনের কল্পনায় হাজারো স্বপ্ন লালন করেন বলেই গত বছর ‘আমি স্বপ্ন হবো’ শিরোনামে একটি ইসালমিক গান গেয়ে হাজার তরুণের স্বপ্নের উদ্যানে উর্বর মাটি ফেলে মন কেড়ে নিয়েছেন। আমি নিজেও কতোবার শুনেছি তার শেষ নেই।

স্বপ্ন দেখান তরুণদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের। স্বপ্ন দেখেন সোনালী বাংলার খেটেখাওয়া মানুষের অধিকার আদায়ের। স্বপ্ন দেখেন,উদ্বাস্তু জনপদের নিরাপদ আশ্রয়ের। স্বপ্ন দেখেন,সমাজের উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটি কুড়েঘর নির্মাণের।

সেই স্বপ্ন বুকে নিয়ে বেরিয়ে যান ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্বারে। একাধারে তিন মাস নিজের আরাম-আয়েশ বাদ দিয়ে কখনো মাথায় করে, কখনে গায়ে খেটে, কখনো উৎসাহিত করে উড়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য গড়ে তোলেন ঘর-মসজিদ,মাদরাসা ও মাথাগোঁজার ঠিকানা।
নিজমাথায় করে মানুষের জন্য খাবার নিয়ে আসার পিকটি দেখে ইতিহাসে বরিত মানুষগুলোর জীবনালেখ্য বার বার চোখের তারায় ভেসে ওঠে।

এখানে থেমে থাকেনি তার কর্ম। কক্সবাজার বীচের সেই টোকাই, উম্মাদ নগরী ‘ঢাকা’র অসংখ্য পথশিশুকে পকেটের টাকায় মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার দৃষ্টান্ত ও কারো অজানা নয়।

বন্যার্ত মানুষের কাছে বারবার ছুটে গেছেন। নিগৃহীত-উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীর দুয়ারে বারবার খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। এসব কারো ‘অজানা’ থাকার কথা নয়।

দেশে বৈশ্বিক মহামারি চলছে। সরকারি আমলা-কামলা থেকে শুরু করে সবাই যখন স্টে-হোমের তাসবীহ জপে ; তখন তিনিই ফি-আমানিল্লাহ বলে ইকারমুল মুসলিমীন তহবীল গঠন করে অনাহারের মুখে অন্ন, এককাপড়ের টোকাইদের পরনের পন্য নিয়ে দৌড়ে বেড়ান।

হাজারো অসহায়-মধ্যবিত্ত পরিবারের মুখে হাঁসি ফুটাতে দিনরাত এককরে খেটে যাচ্ছেন তিনি ও তাঁর সহকর্মীগণ। নিজের ঈদের আনন্দকে মাটি করে অসহায়দের মুখে আহার তুলে দিতে নিজেই ঠ্যালাগাড়ী চালিয়ে যেতে ও দেখেছি। আমরা যখন পরিবার নিয়ে ব্যস্ত তিনি তখন অন্নহীনদের নিয়ে ব্যস্ত। আমরা যখন পরিবারের ছোটমণিদের নিয় ঈদানন্দ করি তিনি তখন পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। বারবার মেয়েরা ফোন করে বলে ‘আব্বু বাসায় কখন আসবেন’।

এমন মানুষের শত্রু থাকে। হেটার্স থাকে। সমালোচক থাকে। তবে মাত্রাতিরিক্ত সমালোচনা অবশ্যই দোষণীয়। একটু ভাবুন তো! এসব! কেন এই আবলামি আপনার? পারবেন ওনার মত কিছু করে দেখাতে? হয়ত না। হয়ত হ্যাঁ। তারপর ও একজন বিদ্যুৎসাহী মানুষের কাজকে বেগবান করতে এসব সমালোচনা না করলে হয়না? আল্লাহ বুঝ দিন।



source https://deshdunianews.com/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf/

0 Comments