দেশ দুনিয়া নিউজ ডেস্কঃ
মুফতি ফয়জুল্লাহঃ
মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোড়
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান, বর্ষীয়ান আলেমেদ্বীন ও রাজনিতিক, মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী সাহেব রহ, আজ (১১/০৫/২০২০) বাদ মাগরীব (৮,৩০ মিনিটের) দিকে রফীকে আ’লার ডাকে সাড়া দিয়েছেন
إنا لله وإنا إليه راجعون
দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম দ্বীন, দীন-মিল্লাতের অতন্দ্রপ্রহরী, মাখদুমুল উলামা,আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন আবদুল লতিফ নেজামী সাহেব রহ, এর ইন্তেকালের খবরটি খুবই দুঃখ ও বেদনার। তাঁর মরহুম হয়ে যাওয়ার সংবাদে মনটা ভেঙ্গে যাচ্ছে। সমৃতির আয়নায় ভেসে উঠছে টুকরো টুকরো অনেক ঘটনা। আহ্ এত দ্রুত তাঁকে হারিয়ে ফেললাম
প্রখ্যাত ও শীর্ষ ইসলামী চিন্তাবিদ, ঈমানী সকল আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, মাওলানা নেজামী সাহেব রহ বহু গুণে গুণান্বিত ছিলেন। আমি আমার জীবনে তাঁকে কোন দিন তাকে ভুলতে পারবো না। তাঁর চিন্তা ও প্রজ্ঞা অভিভূত হওয়ার মতো। তাঁর যুক্তিনির্ভর, গাম্ভীর্যপুর্ন উচ্চারন প্রতিবার অনুপ্রানিত হয়েছি, তাঁর আন্তরিকতাপূর্ণ দু’আ লাভ করেছি।তাঁর হাস্যোজ্জল মুখ ভুলতে পারবো না ।তাঁর পরম স্নেহ, মমতায় সিক্ত হয়েছি জীবনের বাকে বাকে।
তিনি ছিলেন একজন অভিভাবক আলেমে দীন।এদেশের এক পথনির্দেশক প্রাজ্ঞ আলেম। এ মুহূর্তে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও অভিভাবকত্বের জায়গাটিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করার মতো আর কেও কি আছেন?
আমরা যা হারালাম তার সাথে কোন কিছুর তুলনা চলেনা। আল্লাহভীরু, মুখলিস, বিচক্ষন , সময়োপযোগী দুরদর্শী সিদ্ধান্ত নিতে পারঙ্গম , এই আলেম মনিষীর ইন্তেকালে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। আমি তাঁর মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়,স্বজন এবং সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমাবেদনা জানাচ্ছি।
দেশবরেন্য বিখ্যাত এই দরদী আলেম ও মুরুব্বীর জন্য আমরা মহান আল্লাহর শাহী দরবারে কায়মনোবাক্যে মুনাজাত করছি, আল্লাহ! আপনি আপনার এই প্রিয় মুখলিস, আলেম বান্দাহকে আপনার রহমতের চাদরে আবৃত করে চিরস্থায়ী জান্নাতের মেহমান করে নিন। আমীন।
শরিফ মুহাম্মদ
বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক ৷
একজন সহজ সরল মানুষ ছিলেন মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী।
নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিক থেকে এই মানুষটিকে দেখে এসেছি। প্রাচুর্য ও ভাব ছিল না তাঁর মধ্যে। ফুটপাতের পাশে বসে দুই টাকা-পাঁচ টাকা দামের চা খেতে দেখেছি বহু। নিঃসঙ্গ পথচারির মতো ফুটপাত ধরে হাঁটতে দেখেছি। রাস্তায় চলতে গিয়ে পাঁচ টাকার বাদাম কিনে আয়েশ করে খেতে দেখেছি।
নব্বইয়ের দশকে দৈনিক শক্তি নামের একটি পত্রিকায় বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ করতেন। নেজামে ইসলামের সঙ্গে সম্ভবত বহু আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন। প্রতিকূল মুহূর্ত এবং বেকায়দা সময়ে আক্রমণাত্মক প্রশ্ন ও কথাবার্তার সময়েও হাসিমুখে উত্তর দিতে দেখেছি। খোঁচা দিয়ে কথা বলে দেখেছি, ঘরোয়া মানুষের মতো লাজুক ভঙ্গিতে কথার উত্তর দিয়েছেন।
তাঁর লেখার হাত সুন্দর ছিল। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তার কোনো কোনো প্রবন্ধ পড়ে বুঝা যেতো, বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতি, রাজনীতির ইসলামীকরণ, রাজনীতিতে বি- ইসলামীকরণ প্রকল্প, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের চোরাবালি- এসব ব্যাপার তিনি ভালো বুঝতেন।
ময়দানের ইসলামী রাজনীতিক। পথচারী ও পদচারী রাজনীতিক। আলাপি ও নির্বিরোধ মানুষ। কর্মপন্থা ও সিদ্ধান্তে হয়তো কিছু ভুল ত্রুটি ছিল, কিন্তু একজন সদালাপী ভদ্র সজ্জন মানুষ ছিলেন। সারল্যের কারণেই তাঁর কথা খুব মনে পড়ছে।
আজ মাগরিবের পর ইন্তেকাল করেছেন।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করুন।
গাজী ইয়াকুব
যুগ্ম মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোড়
আমার দেখা মাওলানা আব্দুল লতীফ নেজামী (রাহ্)
দীর্ঘ দুইযুগেরও বেশি সময়ধরে আপনার সাথে গভীর একটা সম্পর্ক ছিল
আপনার জবান দিয়ে কখনো আপনি সম্বোধন ছাড়া তুমি ডাকও শুনিনি
কারনে-অকারনে ভুলবুঝে কতকথা আপনাকে বলতাম!
মাঝেসাঝে ফোন দিয়ে দুষ্টামির ছলে বলতাম আজকেই চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দিন
চিরাচরিত গালভরা হাসি দিয়ে বলতেন, গাজী সময় আসলে সবই ঠিক হয়ে যাবে
রমজানের শুরুতে আমাকে কাজের উৎসাহ দিতে নিজেই ফোন দিয়ে বললেন, গাজী সরকার মনে হয় ঢাকায় আল মারকাজুল ছাড়া অন্য কাউকে করোনার লাশ দাফনের অনুমতি দিবে না
আচ্ছা তারপরও আমি আপনার অনুমতির জন্যে চেষ্টা করে দেখি!
আমার জীবনে এতটা মেধাবী এবং ইতিহাস নিয়ে এতবেশী জাননেওয়ালা মানুষ খুব কমই দেখেছি
জীবনভর ভালো একটা জামা কিংবা কোনরূপ বিলাসিতা করতে দেখিনি, রাজনীতিই ছিল ওনার পেশা/নেশা সব
শায়েখ মুফতী আমিনী রাহ্ এর জীবদ্দশায় কতবার দেখেছি রিকসাভাড়া না থাকলে সায়দাবাদ থেকে হেঁটেই লালবাগে চলে আসতেন
আবার হুজুর রিকসা ভাড়া দিলে বাসায় চলে যেতেন
৬৮ বছর রাজনীতি করেও ঢাকায় একটি বাড়ি গাড়ির মালিক হওয়াতো দূরেরকথা আজীবন ভাড়া বাসাতেই জীবন কাটালেন
রাজনীতির শেষজীবনে ওনি কতটা পেশার নিয়ে জীবন কাটিয়েছেন! ইন্টারনাল বিষয়ে আমি কোনরকম আলোকপাত না করলেও সমালোচক ভাইদের বলব! মাওলানা আব্দুল লতীফ নিজামী মন্ত্রীত্বের প্রস্তাবও হাসিমুখে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন
সুতরাং যারা ভীতরগত বিষয়গুলো পরিষ্কার না জেনে বারবার ওনাকে আহত করেছিলেন আল্লাহ আপনাদেরকেও মাফ করে দিন
বাচ্চা থেকে বুড়ো প্রতিটি ইসলামপন্থী কর্মীর কাছেই ওনি ছিলেন সদাহাস্যজ্বল একজন প্রাণবন্ত মানুষ
দাম্ভিকতা, অহংকার কখনোই তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি
আল্লাহপাক পবিত্র রমজানুল মোবারকে ইন্তেকালের সৌভাগ্য নসীব করা মানুষটিকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন
source https://deshdunianews.com/%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%86%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ab-%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%9c%e0%a6%be/
0 Comments