তুরস্কে ব্যতিক্রমী লকডাউন, বাংলাদেশ কি অনুসরণ করবে?

তুরস্কে ব্যতিক্রমী লকডাউন:

বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যেখানে লকডাউনে পুরোপুরি বন্ধ, সেখানে তুরস্ক ভিন্ন পথে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করছে। ব্যতিক্রমী এ লড়াইয়ে দেশটি আংশিক লকডাউন আরোপ করেছে। ২০ বছরের নিচে ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাকি নাগরিকরা অর্থাৎ যুবকদের কাজে বের হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে একদিকে অর্থনীতি চাঙ্গা থাকছে, অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। তুরস্কের এ পন্থাকে অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ স্বাগত জানিয়েছেন।

গত ১০ এপ্রিল তুরস্কে হঠাৎ করেই লকডাউন ঘোষণার পরপরই প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় জমে। এ পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, তুরস্ক তার নাগরিকদের সুরক্ষায় যথেষ্ট। এ সময় তিনি ২০ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেন। এর বাইরে সব নাগরিককে কাজে ফিরতে বলেন। তুরস্কে ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলো বন্ধ। পণ্য ডেলিভারির শর্তে রেস্টুরেন্টগুলো খোলা।

পার্কের মতো জনসমাগমস্থলগুলো বন্ধ এবং ব্যাংকের কর্মঘণ্টা সীমিত করা হয়। এর বাইরে কলকারখানা, নির্মাণ কেন্দ্র এবং অন্য ব্যবসাগুলো পুরোদমে খোলা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আংশিক বিধি নিষেধে তুরস্ক সফল হতে পারে। সূত্র : ওয়ার্ল্ডমিটার্স ও সিএনএন।

বাংলাদেশ কি অনুসরণ করবে?

করোনাভাইরাসের ঝুকি এড়াতে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে। সকল প্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছুটি চলছে। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। সবকিছু থমকে থাকায় কাজে বের হতে পারছেন না কুলি-মুটে, নির্মাণ ও আবাসন শ্রমিকসহ সব ধরনের দিনমজুর। দেশে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত। এ খাতের বড় অংশই দৈনিক, চুক্তিভিত্তিক মজুরি এবং নিয়োগপত্র ছাড়াই কাজ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য শ্রমিক কাজ করছেন মুদি কিংবা বিভিন্ন দোকানে। এর পাশাপাশি পরিবহন, বন্দর, নির্মাণ ও আবাসন এবং হাটবাজার শ্রমিক রয়েছেন। সব মিলিয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কাজ করেন প্রায় দুই কোটি শ্রমিক, যারা এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশ দরিদ্র রাষ্ট্র, দীর্ঘ মেয়াদি লকডাউন যে অর্থনীতিতে বিশাল প্রভাব ফেলছে তা ইতিমধ্যে বিশ্লেষকদের আলোচনায় উঠে এসেছে। প্রবাসী আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ খুব বেশী বিপাকে পড়েছে। তাই অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বন্ধ হওয়ায় যে ক্ষতি সম্মুখিন হয়েছে বাংলাদেশ, তা থেকে রক্ষা করতে তুরস্কের লকডাউন পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এতে একদিকে অর্থনীতি সচল থাকছে, অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব হচ্ছে।

নিজাম উদ্দীন আলগাজী



source https://deshdunianews.com/%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%b2%e0%a6%95%e0%a6%a1%e0%a6%be%e0%a6%89/

0 Comments