দেশ দুনিয়া নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার পর এবার চট্টগ্রাম ফটিকছড়ির নাজিরহাট বড় মাদরাসার মুহতামিমকে পদত্যাগে বাধ্য করাতে আন্দোলনে নেমেছে সে মাদ্রাসার কিছু ছাত্র ও হাটহাজারী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্ররা।
হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলন সফল হওয়ার পর টার্গেটকৃতভাবে নাজিরহাট মাদ্রাসা পরিচালক পদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে ওই গ্রুপটি।
সেই ধারাবাহিকতায় জটিলতা নিরসনে মাদ্রাসার বর্তমান পরিচালক মাওলানা সলিমুল্লাহ শনিবার দুপুরে মাদরাসার মাঠে সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান করলে সম্মেলন চলাকালে সে গ্রুপের ছাত্ররা বিক্ষোভ শুরু করে।
বিক্ষোভকারি ছাত্ররা মাওলানা সলিমুল্লাহকে ‘মুহতামিম মানি না, শূরা চাই, শূরা চাই ‘ বলে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রদের একটি অংশ স্লোগানধারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে উভয়পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপরই মাদরাসায় র্যাব-পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরিস্থিতি শান্ত্ব করতে মাদরাসায় উপস্থিত হোন ফটিকছড়ির এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। তিনি ছাত্রদেরকে শান্ত্ব করে বক্তব্যে বলেন, মাদরাসার মুরব্বিরা চাইলে কালই শূরা বৈঠক করতে পারবেন। সব ধরণের সহায়তা নিরাপত্তা সরকার দিবে।
ছাত্ররা দাবি করে, মুহতামিম পদে মাওলানা সলিমুল্লাহ তারা দেখতে চাননা। তাকে মাদরাসা থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শূরা কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে।
মাদ্রাসায় উত্তেজনার বিষয়ে জানতে চাইলে হাটহাজারী সার্কেলের পুলিশের এসপি আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুপুরের দিকে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসার মুহতামিম শায়খুল হাদিস শাহ মোহাম্মদ মারা যাওয়ার পর তার পদে মাওলানা সলিমুল্লাহকে নিয়োগ দেন আল্লামা শফী। আল্লামা শফী ওই সময় এক ভিডিওবার্তায় মাওলানা সলিমুল্লাহকে নাজিরহাট মাদ্রাসার মুহতামিম নিয়োগের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে হেফাজতের সাবেক শীর্ষ নেতা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে আল্লামা শফীর বিরোধ প্রকাশ্যে রূপ নেয়। আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর মামা। তিনি বর্তমান ফটিকছড়ি উপজেলার দৌলতপুর বাবুনগর মাদ্রাসার মুহতামিম এবং নাজিরহাট বড় মাদ্রাসার অন্যতম শূরা সদস্য। এই পক্ষটি মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমীকে মুহতামিম হিসেবে নিয়োগ দিতে চাইছেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘মৃত্যুর আগে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আহমদ শফী নাজিরহাট মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা সলিমুল্লাহকে নাজিরহাট মাদ্রাসার পরিচালক নিয়োগ দেন। যা নিয়মবহির্ভুত। এতে এলাকাবাসী উত্তেজিত ও বিক্ষুব্ধ।’
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন নাজিরহাট বড় মাদরাসা পরিচালক আল্লামা শাহ মুহাম্মদ ইদ্রিস ইন্তেকাল করলে সহকারী পরিচালক মুফতি হাবিবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত মুহতামিমের দায়িত্ব দেয় শূরা কমিটি। পরবর্তিতে মাদরাসার শূরা সদস্য হাটহাজারী বড় মাদরাসার সাবেক পরিচালক মরহুম আল্লামা আহমদ শফী মাওলানা সলিমুল্লাহকে ওই মাদরাসার মুহতামিম ঘোষণা করলে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মুফতি হাবিবুর রহমান তা মানতে নারাজ ছিলেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে মাদরাসা জুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
অনেকে মনে করছেন, আল্লামা আহমদ শফীকে আন্দোলনের মাধ্যমে পদচ্যুত করে এবার আল্লামা আহমদ শফীর মনোনীত নাজিরহাট বড় মাদরাসার পরিচালককে পদচ্যুত করাতে ওই সক্রিয় কাজ করছে। হাটহাজারী আন্দোলন যে ফেসবুক পেজ থেকে পরিচালিত হয়েছে (উসামা মুহাম্মদ) সেই পেজ থেকেই নাজিরহাট মাদ্রাসা পরিচালককে “ডাকাত সলিমুল্লাহ” অভিহিত করে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ অভিযোগে অভিযুক্ত করে তারা প্রচারণা চালিয়েছে।
সে গ্রুপটি কারা জানতে চাইলে তারা বলেন, এরা (হুজি) মানহাজি গ্রুপের সদস্য। যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন হাবিবুর রহমান কাসেমীর জামাতা। শশুরকে মসনদে বসাতে (হুজি) মানহাজি গ্রুপের ছাত্রদের ব্যবহার করছে।
source https://deshdunianews.com/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b0/
0 Comments