- আলমগীর ইসলামাবাদী
- চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
নাজিরহাট বড় মাদরাসায় বিতর্কিতভাবে মুহতামিম নিয়োগের ঘটনায় আহমদ শফির নামে মামলাকারি মুফতী হাবীবুর রহমান কাসেমীর বাসায় হামলার ঘটনা ঘটে। আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীসহ দেশবরেণ্য বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম এ ঘটনার নিন্দা ও বিচার দাবি করেন।
গত ১২ই আগস্ট ২০২০ বুধবার বাদ মাগরিব চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট বড় মাদরাসার অভ্যন্তরে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মুফতী হাবীবুর রহমান কাসেমীর কোয়াটারে বিতর্কিত শিক্ষক মৌলভী সলীমুল্লাহ ও তার লেলিয়ে দেওয়া বখাটে বাহিনীর হামলা, বাসায় অবস্থানরত মহিলাদেরকে গালাগালি, বাসার বৈদ্যুতিক সংযোগ কেটে দেয়া, মুফতী সাহেবের রুম থেকে খাদেমকে বের করে দিয়ে তালাবদ্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীসহ দেশবরেণ্য বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম।
তাঁরা আজকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, এ ধরনের ঘটনা কোন কওমী মাদরাসায় নজিরবিহীন। এ যেন প্রচলিত স্কুল-কলেজকেও হার মানায়। কুরআন-হাদীসপড়া মানুষ তো বটেই, সাধারণ কোন মানুষও এমন ঘটনা ঘটাতে পারে না।
তাঁরা আরও বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে, উক্ত বিতর্কিত শিক্ষক মৌলভী সলীমুল্লাহ নাজিরহাট মাদরাসায় বসে কওমী মাদরাসাবিরোধীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। তাঁরা বলেন, মৌলভী সলীমুল্লাহ প্রবীণ আলিম ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম মুফতী হাবীবুর রহমান কাসেমীর ছাত্র হয়ে শিক্ষকের প্রতি যে আচরণ করছে, সেটা কওমীর আগামী প্রজন্মকে কলুষিত করবে।
বিবৃতিদাতারা বলেন, মৌলভী সলীমুল্লাহ বৈধভাবে নিয়মতান্ত্রিক শুরার পথে না গিয়ে অবৈধভাবে ভূয়া শুরার নামে গায়ের জোরে নাজিরহাট বড় মাদরাসার পরিচালক হতে তাবৎ অবৈধপন্থা অবলম্বন করে চলেছে। এতে শত বছরের অধিক প্রাচীন নাজিরহাট বড় মাদরাসা ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে।
বিবৃতিদাতারা বলেন, এ মুহূর্তে প্রশাসন যেভাবে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, তা রীতিমত উদ্বেগজনক। তারা চাইলে, গতকালের ঘটনা রোধ করা যেত। কারণ, কয়েকদিন থেকে মৌলভী সলীমুল্লাহ মুফতী কাসেমীর বাসায় হামলা, রুম তালাবদ্ধ করে দেয়াসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিলো। মুফতী কাসেমী সবকিছু ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগাম জানানোর পরও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় গতকালের ঘটনা ঘটতে পেরেছে বলে বিবৃতি দানকারী উলামায়ে কেরাম মনে করছেন।
তাঁরা আরও বলেন, যেখানে আদালতে মামলা বিচারাধীন, সেখানে এমন ঘটনা আদালতের প্রতি চরম অবমাননা বৈ কিছু নয়। তাঁরা অতিসত্বর মৌলভী সলীমুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তাঁরা আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, এখনই যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়, তবে ভবিষ্যতে আরও গুরুতর ঘটনা ঘটতে পারে। তাঁরা বলেন, রাতের অন্ধকারে মুফতী কাসেমীর বাসায় একাকী থাকা মহিলাদেরকে আতঙ্কিত করা নারী নির্যাতনের শামিল। তাঁরা অবিলম্বে এসব বন্ধ করার জোর দাবি জানান।
বিবৃতিদাতারা বলেন, ঘটনায় যেভাবে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ মাদরাসার দরদী মানুষ মৌলভী সলীমুল্লাহ ও তার সহচরদের বিরুদ্ধে বেরিয়ে এসেছেন, তা শুকরিয়ার দাবিদার ও মুবারকবাদযোগ্য। তাঁরা মাদরাসার প্রয়োজনে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে এলাকার দীনদরদী মুসলামানদের প্রতি আহ্বান জানান। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন: মাওলানা হাফিয কাসেম সাহেব, পরিচালক, জামিয়া তালিমুদ্দীন, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম, আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী-জামেয়া বারিধারা, ঢাকা, মাওলানা আব্দুল হালীম বোখারী, পরিচালক, জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, জামেয়া নূরিয়া ঢাকা, আল্লামা আবদুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা নাজমুল হাসান, নায়েবে মুহতামিম, জামেয়া বারিধারা, ঢাকা, মুফতী কামালুদ্দীন, জামেয়া মাহমুদিয়া ঢাকা, মাওলানা মুসা ইজহার, জামেয়া তাতিবাজার ঢাকা, মুফতী মাসুম বিল্লাহ হাবিবী, খতিব, উত্তরা ঢাকা, মুফতী ফখরুদ্দীন, শরসদি মাদরাসা ফেনী, মাওলানা জাকারিয়া নোমান, মেখল মাদরাসা, মাওলানা হাফেজ সাইফুল্লাহ, হাটহাজারী প্রমূখ।
source https://desh-duniyanews.com/%e0%a6%86%e0%a6%b9%e0%a6%ae%e0%a6%a6-%e0%a6%b6%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf/
0 Comments