অবিরাম বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামে ঘরবন্দী ৫ লাখ মানুষ

  • শরীফুজ্জামান
  • কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে অবিরাম বৃষ্টির কারণে দেখা দিয়েছে তৃতীয় দফায় বন্যা। ধরলা নদীর পানি বেড়ে আবারো পানিবন্দী হয়ে পরেছে নদীর তীরবর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি অপরিবর্তিত থাকলেও বিপদসীমার উপরে অবস্থান করায় টানা তিন সপ্তাহ ধরে মানুষ সীমাহীন কষ্টের মধ্যে রয়েছে।

এদিকে চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল এলাকায় ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার আরো ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এনিয়ে জেলার ৫ লক্ষ পানিবন্দী মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। জেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫৬টি ইউনিয়নের ৪৭৫টি গ্রাম পানির নীচে তলিয়ে আছে। লোকজন বন্যার পানির মধ্যে বাড়ির ভিতর চৌকি উঁচু করে, রাস্তায়, রেললাইন, সড়ক ও বাঁধে অবস্থান নিয়েছে। ভারি বর্ষণের কারণে তাদের দুভোর্গ চরমে উঠেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার। ফলে জেলা শহরসহ সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

বন্যার পানির স্রোতে জেলা শহরের বড় গরুর হাট সদরের যাত্রাপুর ও ঘোগাদহ ইউনিয়নের একটি সড়বের দুটি জায়গা পানির তোড়ে ভেসে যাওয়ায় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ঈদের আগে এই হাটের বেচাকেনা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন ইজারাদার, গরুর খামারীরা ও ব্যাবসায়ীরা।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে রৌমারীতে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত উপজেলা শহর রক্ষা সেমিবাঁধ ৩০ মিটার ছিঁড়ে যাওয়ায় পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলা পরিষদসহ রৌমারী বাজার। ফলে চরম বিপাকে রয়েছে এখানকার মানুষ। একই অবস্থা বিরাজ করছে চর রাজিবপুর উপজেলায়। বন্যায় উপজেলা পরিষদে পানি ওঠায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

এছাড়াও চিলমারীতে কাঁচকোল ব্রীজের কাছে রাস্তার উপর দিয়ে পানি ওঠায় চিলমারী শহরে পানি ঢুকেছে। এছাড়াও কুড়িগ্রাম পৌরসভা ও নাগেশ্বরী পৌরসভার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি ওঠায় লোকজন নিরাপদ আশ্রয় না পাওয়ায় মহাসড়ক, বাঁধ অথবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে ওইসব এলাকার পরিবারগুলো।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, উজানে প্রবল বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটবে। চলতি মাসে পানি কমাবাড়া করলেও আবহাওয়া ও ফোরকাষ্টের তথ্য অনুযায়ী আগস্টে আরেকটি বন্যা হতে পারে।

সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ১৭০ মেট্রিকটন জিআর চাল, ৯ লক্ষ টাকার ত্রাণ উপজেলাগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও শিশু খাদ্য ও গবাদিপশুর জন্য ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।



source https://desh-duniyanews.com/%e0%a6%85%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a7%83%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a7%9c%e0%a6%bf%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be/

0 Comments