অমুসলিমদের থেকে জ্ঞান ধার করে মূর্খরা ইবাদতের পদ্ধতি শিখাচ্ছে

দেশে এক বিস্ময়কর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যারা নিজেরা দীন-ধর্মের ধার ধারে না, ইসলামের অনুশাসন মেনে চলে না, ইসলামের তেমন কোনো জ্ঞান রাখে না, সে তারাই বিজ্ঞ আলেম সমাজকে কটাক্ষ করছে। অশিক্ষিত কাঠমোল্লা আখ্যা দিচ্ছে, ধর্মপ্রাণ মানুষকে ধর্মান্ধ বলে তিরস্কার তাচ্ছিল্য করে যাচ্ছে, নিজেরা নিজের মত করে দীন-ধর্মের ব্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছে, কোরআনের অশুদ্ধ তেলাওয়াত করে ভুল তারজামা করছে। হাদীস ও ফিকহের জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও ভুল হাদিস-মাসালা দিয়ে যাচ্ছে।
কোন কোন ব্যারিস্টার পাঞ্জাবি টুপি ওয়ালাদের জামাতকে কটাক্ষ করছে। অথচ সে নিজেই আবার মুজিব কোট পড়লে করোনার ভয় নেই, মৃত্যুর ভয় নেই ঘোষণা দিয়ে মানুষের হাসির পাত্র হচ্ছে।
সম্প্রতি ঢাকা ৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী টেলিভিশনের অনুসরণে তারাবির জামাত অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা পেশ করে সারাদেশের মানুষকে করোনা পরিস্থিতির আতঙ্কের মধ্যে বিনোদন দিয়েছে। মাদরাসার মক্তবের ছাত্রও জানে এভাবে নামাজ শুদ্ধ হবে না। কিন্তু জানলো না মাথামোটা সে এমপি সাহেব। তাকে অসংখ্য ফেসবুকাররা প্রশ্ন করেছে, বিদ্যুৎ চলে গেলে কি অবস্থা হবে? সে কি পারবে এ প্রশ্নের জবাব দিতে?
এখন চিন্তার বিষয় হল, এমন মূর্খরা কেন ইসলামের ব্যাখ্যা দিতে আসে? এর পিছনে ব্যক্তিগতভাবে আমি যা উপলব্ধি করলাম, একশ্রেণীর অবসরপ্রাপ্তরা অবসর সময় কাটানোর জন্য ইসলাম নিয়ে গবেষণা করে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যাচ্ছে।
আবার অনেকে লক্ষ্য করল যে, আলেম-ওলামাদের মানুষ সম্মান করে। আলেমদের বয়ানে মানুষের বড় জামাত হয়। আলেমদের মানুষ ভালবাসে। এই সম্মান-ভালোবাসা অর্জনের জন্য কিছু মানুষ ইসলামের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভুল করে ফেলে।
আবার অমুসলিমরা আমাদের সবকিছুতে আধিপত্য বিস্তার করার পর এখন তারা আমাদের ইবাদত-বন্দেগীকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। অমুসলিমদের একটি প্রভাব আমাদের আধুনিক শ্রেণীর উপর পড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে তারা আমাদের অনেককিছু নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মহামারি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বার বার বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ঠিক এ কারণে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে পবিত্র রমজান মাসেও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর জোর দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে রমজানে গণজমায়েত না করে ভার্চুয়াল যোগাযোগ রক্ষায় মুসলিমদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
ডব্লিউএইচও জানায়, শারীরিক সংস্পর্শ এড়াতে হবে। তারা পরামর্শ দিয়েছে হাত নাড়ানো, মাথা নোয়ানো কিংবা বুকে হাত রেখে অভিবাদন জানানো যেতে পারে। অসুস্থ ও বয়স্কলোকদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাদের কোনোভাবেই কোনো ধরনের জমায়েতে যাওয়া উচিত হবে না। এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ডব্লিউএইচও জমায়েতের বদলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভার্চ্যুয়াল বিকল্প খুঁজে নিতে ইন্টারনেট, টেলিভিশন বা রেডিওর শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, (ডব্লিউএইচও) এর উপর্যুক্ত পরামর্শের ভিত্তিতে অনুপ্রাণিত হয়ে এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী টেলিভিশনের অনুসরণে তারাবির জামাত অনুষ্ঠানের উদ্ভট প্রদ্ধতি পেশ করেছে।
এভাবে চলতে থাকলে একদিন ইসলামের সীমা-রেখার হেফাজত থাকবে না।
লেখক: মাওলানা আবদুর রাজ্জাক
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, রাষ্ট্রচিন্তক,
সম্পাদক দেশ দুনিয়া নিউজ


source https://deshdunianews.com/%e0%a6%85%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%9e%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%a7%e0%a6%be/

0 Comments