দেশ দুনিয়া নিউজ ডেস্ক: শুরুতে বলে রাখি, লেখাটি একান্ত ধর্মীয় আবেগ-বিশ্বাস ও মহান আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশা থেকে। তাই অতি বিজ্ঞানমনস্কা, আধুনিক ইসলামী চিন্তাবিদ বা মুক্তমনাদের অগ্রিম ধন্যবাদ, কাঠমোল্লা খেতাব না দেয়ার জন্য।
বর্তমান করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা দিতে রাষ্ট্র এক ধরণের ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুধু সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে তা নয়, বরং প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাষ্ট্রের কর্ণধার এমনকি চিকিৎসক পর্যন্ত মারা যাচ্ছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা করোনা থেকে মুক্তির জন্য ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে বারবার সতর্ক করে যাচ্ছেন। তাদের সতর্ক করণের মূল বিষয় হচ্ছে দুটি। এক- জনসমাগম এড়ানো ২-পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা।
প্রথমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলি। অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতা থেকে মুক্ত থাকলে বা জীবাণু লেগে যাওয়ার পর তা ধুয়ে ফেলার মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা সম্ভব।
যে জীবাণু আমাদের দেহের সাথে লেগে যায় তা ধৌতকরণ বা অবগাহণের মাধ্যমে মুক্ত করা সম্ভব।
আবার কিছু জীবানু আছে এমন, যা আমাদের হৃদয়াত্মার সাথে মিশে যায়। হাদীসে পাকে বলা হয়েছে,
“প্রত্যেক মানবদেহে একটা গোস্তের টুকরা আছে। যা সুস্থ থকলে গোটা শরীর সুস্থ থাকে। আর যা নষ্ট হলে গোটা শরীর নষ্ট হয়ে যায়। আর সেই গোস্তের টুকরাম নাম হলো ‘ক্বলব’।
করোনা একটি অদৃশ্য জীবাণু, যতক্ষন না তা মানবদেহে প্রবেশ করে ধৌতকরণপর মাধ্যমে তা ধ্বংস হয়। তবে যাদি তা মানবদেহে ভিতরে ঢুকে যায় তখন তাকে ধ্বংস করা কঠিন হয়ে পড়ে।
আর করোনার জীবাণু থেকেও বড় ভয়ঙ্কর জীবানু হলো পাপের জীবাণু, যা মানুষের হৃদয়াত্মায় মিশে যায়, তা দুনিয়ার কোন সাবান, পানি ও জীবানুনাশক দ্বারা ধৌত করা সম্ভব নয়।
হৃদয়াত্মায় জমে থাকা পাপাচারের জীবানুকে ধ্বংস করতে হলে প্রয়োজন পাপনাশক তাওবা।
রমজান মাসে রোজাসহ এমন কিছু কর্ম আছে যেগুলো দ্বারা হৃদয়াত্মার সকল জীবাণু ধ্বংস করা সম্ভব। রমজানের রোজা সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেছেন, “তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছে। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। (বাকারা -183)
পাপাচারের বড় দুটি সংশ্লিষ্ট মূল দুটি বস্তু পেট এবং লজ্জাস্থান। বড় বড় সব পাপের সম্পর্ক এ দুটি বস্তু সাথে। রমজানের সিয়াম-সাধনার মাধ্যমে পাপাচারের মূল দুটি বস্তু পেট এবং লজ্জাস্থানকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আর এ দুটি বস্তুর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানুষ পাপাচারের জীবণু থেকে মুক্তি লাভ করতে সক্ষম হয়।
এছাড়াও রমজানে পবিত্র কালামে পাকের তিলাওয়াত করা, তিলাওয়াত শোনা, জিকির-আজকার, ইস্তেগফার ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষ হৃদয়ে জমে থাকা জীবাণু ধ্বংস করতে পারবে।
দ্বিতীয়তঃ রমজানে কু-প্রবৃত্তি দমন ও সিয়াম-সাধনার দরুন মানুষের মাঝে নির্জনতার মনোভাবও সৃষ্টি হবে। আর এতে মানুষ জনসমাগম এড়াতে অভ্যস্ত হবে।
রমজানের একটা বড় শিক্ষা হলো, সমবেদনার মনোভাব তৈরি হওয়া। এটা বর্তমান সময়ে খুবই প্রয়োজন। কারণ মানুষ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব রাখা শুরু করে দিয়েছে। এতে মানুষের মন থেকে মানবতাবোধ বিলুপ্ত হতে চলেছে। আর করোনার দ্বারা সৃষ্ট দারিদ্রতাও রমজানের উসিলায় দূর হবে। কারণ আমাদের নবীজী সাঃ বলেছেন, “রমজান হলো সে মাস, যাতে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি পায়।”
অতএব, হে মুমিন-মুসলিম ভাই-বোনেরা! আতঙ্কিত ও হতাশ না হয়ে রমজানে আমলের মাধ্যমে আশাবাদী হোন সুস্থতার । আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশা ও রমজানের আমলই আমাদেরকে মুক্তি দিতে পারে করোনা থেকে ।
লেখক: মাওলানা আবদুর রাজ্জাক
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, রাষ্ট্রচিন্তক,
সম্পাদক দেশ দুনিয়া নিউজ
source https://deshdunianews.com/%e0%a6%b0%e0%a6%ae%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%b0/
0 Comments